আওয়ার ইসলাম: ধর্মীয় আলোচক ড. জাকির নায়েক মালয়েশিয়ায় এক মন্তব্যের জেরে বিপাকে পড়েছেন। মালয়েশিয়ায় সভা-সমাবেশে তার বক্তৃতা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তার কথা বলায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। খবর মালয় মেইলের।
আজ বুধবার মালয়েশিয়ার পুলিশ মহাপরিদর্শক দাতুক সেরি আব্দুল হামিদ জানান, সামাজিক মাধ্যমসহ সব প্ল্যাটফর্ম থেকেই সাময়িক নিষিদ্ধ করা হয়েছে জাকির নায়েককে।
পুলিশ মহাপরির্দশক বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অভিযোগে যেকোনো ধরনের বক্তব্য দেয়া থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে জাকির নায়েককে।
বিষয়টি নিয়ে যেন আমরা পূর্ণ তদন্ত সম্পন্ন করতে পারি সে লক্ষ্যেই নেয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন প্রত্যেক রাজ্যের পুলিশ প্রধান জাকির নায়েকের বক্তব্যের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বিষয়গুলো দেখবে।
আইজিপি বলেন, কেলানতানের ঘটনার পর জনমনে দ্বিধা ও অস্বস্তি কাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। ঝামেলা এড়াতে তার বক্তব্য প্রদানে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
পুলিশ মহাপরিদর্শক দাতুক সেরি বলেন, এটা স্পষ্ট যে আমরা এমন ধর্মীয় বক্তব্য ও রাজনৈতিক বিষয় চাইছি না। রাজনৈতিক বিষয়ে ধর্মীয় বক্তব্য দেয়া ঠিক নয়। সেটা জাতীয় পর্যায় হোক কিংবা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে।
ভারতের আদালতে অর্থপাচার ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর মধ্য দিয়ে জিহাদি কার্যক্রম উদ্বুদ্ধ করার অভিযোগ উঠেছে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় পুলিশি তদন্ত চলছে।
তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিললে তার মালয়েশিয়ায় বসবাসের অনুমতি বাতিল করা হতে পারে। ইতোমধ্যে মালায়েশিয়ায় যেকোনো ধরনের সমাবেশে বক্তব্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে তার।
সম্প্রতি জাকির নায়েককে উদ্ধৃতি দিয়ে মালয়েশিয়ার গণমাধ্যম সংবাদ ছেপেছে, ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের চেয়ে মালয়েশিয়ায় থাকা সংখ্যালঘু হিন্দুরা শতগুণ বেশি অধিকার ভোগ করছেন। মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী হিন্দুরা দেশটির চেয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন করেন বেশি। জাকির নায়েক এ ধরনের খবরের প্রতিবাদ করেছেন। তার দাবি, সংবাদমাধ্যম তার বক্তব্য ভুলভাবে তুলে ধরেছে।
হিন্দুদের নিয়ে জাকির নায়কের এ মন্তব্যের জেরে তাকে মালয়েশিয়া থেকে বের করে দেয়ার প্রসঙ্গটি আলোচনায় আসে। এ ঘটনায় তদন্তে নেমেছে পুলিশ। করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। তদন্তে সত্যতা পেলে জাকির নায়ককে মালয়েশিয়ায় বসবাসের অনুমতি বাতিল করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ।
এ বিষয়ে মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, জাকির নায়েকের স্থায়ী বসবাসের অনুমতি রয়েছে। তবে যদি তিনি জাতির জন্য ক্ষতিকর কিছু করে থাকেন, আমরা তার এ অনুমতি বাতিল করতে পারি।
উল্লেখ্য, ভারতে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর মধ্য দিয়ে জিহাদি কার্যক্রম উদ্বুদ্ধ করার অভিযোগ রয়েছে জাকিরের বিরুদ্ধে। দিল্লির পক্ষ থেকে তাকে ফেরত পাঠানোর আনুষ্ঠানিক আবেদন করা হলে ২০১৮ সালে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ এ ব্যাপারে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
-এটি