রকিব মুহাম্মদ: রাজধানীর একটি মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মাওলানা আব্দুল্লাহ। তার মাদরাসার লিল্লাহ বোর্ডিং-এর জন্য এলাকাবাসী কুরবানি পশুর চামড়া দান করেছেন। ট্রাকভর্তি সেই চামড়া নিয়ে রাজধানীর কারওয়ান বাজার সংলগ্ন মোড়ে বিক্রি করতে আসে আব্দুল্লাহ। কাঁচা চামড়ার বাজার দর দেখে মাথায় হাত পড়ে তার। অবশেষে সামান্য টাকায় চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হয় মাওলানা আব্দুল্লাহ।
আওয়ার ইসলামকে তিনি বলেন, গত বছরের তুলনায় চামড়া কালেকশন বেশি হয়েছে। ছাত্ররা মাদরাসার জন্য আন্তরিকভাবে খেদমত করেছেন। এলাবাসীও আমাদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন। কিন্তু আমরা এ বছর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত টাকাও পাইনি। কাঁচা চামড়া সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়েই আমাদের সব চামড়া আজই বিক্রি করতে হয়েছে।
মাওলানা আব্দুল্লাহর মতো পরিস্থিতির শিকার হয়েছে ঢাকার একাধিক মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। একেকটি গরুর চামড়া আকার ভেদে ৩শ' থেকে ৬শ' টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে।
মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারি নির্ধারিত দামে চামড়া কিনেও বড় অংকের ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। এ ক্ষেত্রে তারা দোষারোপ করেন পোস্তার ব্যবসায়ীদের। অন্যদিকে পোস্তার ব্যবসায়ীরা দোষ দেন ট্যানারি মালিকদের। তারা বলেন, সরকার প্রতি ফুট চামড়ার দাম ৫০ টাকা বেধে দিলেও তারা নানা অজুহাতে ওই দামে চামড়া কিনছেন না।
মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাঁচ বছর পর চামড়ার বাজার বলে আর কিছু থাকবে না। তবে পোস্তার ব্যবসায়ীরা বলছেন, হিসাব করে যারা চামড়া কিনেছেন তাদের লোকসান হবে না।
তারা জানান, চামড়া কেনার জন্য তারা ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে কোনো টাকা পাননি। এছাড়া সরকারি দাম বেধে দিলেও সেই চামড়া কি লবণজাত করার আগে না পরে তা উল্লেখ করে দেয়নি। এ কারণে তারা এবার চামড়া কম কিনছেন।
সাইন্সল্যাব, পোস্তাসহ বিভিন্ন স্থায়ী ও অস্থায়ী আড়ৎ এ ট্যানারি প্রতিনিধি ও আড়ৎদারদের কাছে চামড়া বিক্রি করতে এসে রাজধানীর পাড়া মহল্লা থেকে কোরবানীর পশুর চামড়া সংগ্রহ করা মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তবে ট্যানারি মালিক ও প্রতিনিধিরা বলছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীদের অজ্ঞতার কারণেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এ বছর ঢাকার মধ্যে প্রতিবর্গফুট গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা আর ঢাকার বাইরে দাম ধরা হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা ।
আরএম/