বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

‘কুরবানী বিশ্ব ইতিহাসে আত্মত্যাগের নজীরবিহীন ঘটনা’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইশতিয়াক সিদ্দিকী
হাটহাজারী প্রতিনিধি

দেশের সর্ববৃহৎ অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ও দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসার সহযোগী পরিচালক শাইখুল হাদীস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, কুরবানী ইসলামের অন্যতম একটি শি'আর বা নিদর্শন,কুরবানীকে যারা পশু হত্যাযজ্ঞের মহোৎসব বলে তারা ইসলাম ও মুসলমানদের চরম দুশমন৷

আজ শনিবার সংবাদ মাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে এ সব কথা বলেন তিনি।

আল্লামা বাবুনগরী আরো বলেন,কুরবানী বিশ্ব ইতিহাসে এক নজিরবিহীন আত্মত্যাগের ঘটনা৷মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহীম আ.এর প্রাণপ্রিয় পুত্র হযরত ইসমাঈল আ. আল্লাহর রাহে কুরবানীর সমৃতিচারণে মুসলিম উম্মাহ শতাব্দীর পর শতাব্দী কুরবানীর মহানব্রত পালন করে আসছে৷এতে কারো কোন আপত্তি ছিলনা৷

কিন্তু বর্তমান সময়ে গুটি কয়েক নাস্তিক মুরতাদ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ও স্মৃতিবিজরিত ইবাদাত কুরবানীকে পশু হত্যাযজ্ঞের মহোৎসব আখ্যা দিয়ে কুরবানী বন্ধের অপচেষ্টা চালাচ্ছে৷তাদের এ হীনচেষ্টা ৯০% মুসলমানের দেশে কষ্মিনকালেও বাস্তবায়ন হবে না৷

তিনি আরো বলেন,আল কুরআনের ঘোষণা এবং আধুনিক বিজ্ঞানের গবেষণা এ কথা প্রমাণ করেছে যে, দুনিয়ার বুকে বিচরণকারী প্রাণীতেই কেবল প্রাণ আছে এমন নয়৷বরং গাছপালা,তরু-লতা,শাক সবজি সহ সবকিছুতেই প্রাণ আছে৷

এর দ্বারা বুঝা যায় শুধু পশু জবেহ করাই জীব হত্যা নয় বরং প্রকৃতির যে কোন বস্তু কর্তন করাই জীব হত্যার শামিল৷অথচ এটা কোন বিবেক সম্পন্ন মানুষের কথা হতে পারে না৷

কুরবানীকে যারা পশু হত্যার মহোৎসব বলে তাদের প্রতি প্রশ্ন রেখে আল্লামা বাবুনগরী বলেন,কুরবানীর দিন ছাড়াও তো পুরো বিশ্বে দৈনিক লাখ -লাখ গরু,ছাগল জবাই হয়৷লক্ষ-লক্ষ মুরগী জবেহ হয়, শত শত টন মাছ সাগর-নদী থেকে ধরা হচ্ছে৷সেগুলোতে কি প্রাণ নেই(?)নাস্তিকদের মতে এগুলো কি হত্যাযজ্ঞ নয়(?) শুধু কুরবানীর পশু নিয়ে কেন তাদের এতো প্রশ্ন(?)

আল্লামা বাবুনগরী বলেন,হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পাঠা বলি দেয় এবং অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরাও তাদের ধর্মীয় বিভিন্ন উৎসবে হাজারা প্রাণী জবেহ করে তখন তথাকথিত পশুপ্রেমীরা পশু হত্যাযঙ্গ বলে হৈ হুল্লুড় করে না৷শুধুমাত্র মুসলমানদের কুরবানীর সময়ই তাদের পশুপ্রেম উতলিয়ে উঠে৷

কুরবানীকে পশু হাত্যার মহোৎসব বলে আখ্যায়িত করে৷এটা ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি তাদের বিদ্বেষী মনোভাবের বর্হিপ্রকাশ বৈ কিছুই নয়৷

কুরবানী আল্লাহ তায়ালার হুকুম৷আল্লাহ তায়ালার প্রতিটি হুকুম মানব জাতীর কল্যানের জন্য।কুরবানী সম্পর্কে জওহর লাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক বিকাশ রাওয়াল তার এক গবেষণায় বলেছেন, বছরে ৩ কোটি ৭০ লাখ পুরুষ গরু-মহিষ জন্ম হয়। জবাই বন্ধ হলে এদের খাবারের পেছনে বছরে ৫.৪ লক্ষ কোটি টাকা খরচ হবে। যা অর্থনীতি উন্নয়নের চাকাকে অনেকটা পিছিয়ে নেবে৷

এ ছাড়াও মুসলমান জাতি পশু কুরবানি না করলে ১০ বছর পর-(ক)পশুর খাদ্য ও বাসস্থান সংকট দেখা দিবে৷ (খ)মানুষের আয় কমে যাবে৷ (গ) মানুষের খাদ্য সংকট দেখা দিবে ও (ঘ)মানুষের রোগ বালাই বেড়ে যাবে।

আল্লামা বাবুনগরী আরো বলেন, কোরবানির পশুর বিপুল পরিমান চামড়া দেশের অর্থনীতি কে সচল করে৷কোরবানি উপলক্ষে দেশের গরিব দুস্থ মানুষ গরু জবাই, গোশত কাটা ও বর্জ পরিষ্কার করে একদিনের জন্য হলেও ভাল ইনকাম করে৷

ইসলামে করবানীর গোস্তের বিধান হলো কিছু গোস্ত গরীব দুঃখিদের মাঝে বন্টন করবে।এর দ্বারা যে সকল গরীব মিসকিন ও অসহায় প্রকৃতির মানুষ সারা বছর গোস্ত কিনে খেতে পারে না তারা কুরবানীর সময় একদিন নয় বরং কেহ কেহ ১০/১৫ দিন পর্যন্ত গোস্ত খাওয়ার সুযোগ পায়।

সুতরাং কুরবানী,পশু হত্যাযজ্ঞের মহোৎসব নয় বরং ইসলামের অন্যতম শি'আর হওয়ার পাশাপাশি অর্থনীতির উন্নয়ন ও ভবিষ্যত সৃষ্ট অনেক সংকটের আশু সমাধান৷

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ