আওয়ার ইসলাম: আজ শুক্রবারের জুমার নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে দীর্ঘ ৫ দিন পরে ভারত শাসিত জম্মু ও কাশ্মিরের নিরাপত্তা লকডাউন ও কারফিউ লকডাউন কিছুটা শিথিল করে ফোন পরিষেবা এবং ইন্টারনেট আংশিকভাবে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
ভারতের একমাত্র মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্যটি ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছে। স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নিয়ে দিল্লীর শাসন কার্যকর করার জন্য ৫ দিন ধরে প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল মোদীর হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার।
বিশেষ মর্যাদার অবসান ও রাজ্যটিকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর, কাশ্মীর উপত্যকা জুড়ে অতিরিক্ত প্রায় ৭০ হাজার সুরক্ষা কর্মী মোতায়েন করেছে দিল্লি।
বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল যাবতীয় যোগাযোগ ব্যবস্থা। কাশ্মীর এখন এক উত্তপ্ত আগ্নেয়গিরি, মোদী সরকার উত্তাপ টের পেতে ঈদের আগে জুমার দিনেই পরীক্ষামূলকভাবে এই আগ্নেয়গিরির মুখটা কিছুটা খুলেছে।
শ্রীনগরের জামে মসজিদের ফটকগুলো বন্ধ করে দেওয়া, যার অর্থ হচ্ছে নগরীটির প্রধান মসজিদে নামাজের কোনো সম্ভাবনা নেই।
তবে, অভ্যন্তরীণ ছোট ছোট মসজিদে নামাজ পড়ার অনুমতি দেওয়া হবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আদেশ নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত কর্মচারীও মোতায়েন করা হয়েছে।
জুমাকে ঘিরে কাশ্মিরিদের স্তব্ধ ক্ষোভ ফেটে পড়ার সম্ভাবনা যে প্রবল, আর ভারত যে তাতে শঙ্কিত তার ইঙ্গিত তাদের কর্মকর্তাদের কথায় স্পষ্ট। কোনো সমস্যা ছাড়াই নামাজ পড়লে সীমাবদ্ধতা আরও কমে যেতে পারে বলে কর্মকর্তা জানান।
বিজেপি সরকার প্রতিবাদ বা সমাবেশ এড়ানোর চেষ্টায় রাজ্যটির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লাহ সহ প্রায় ৪০০ রাজনৈতিক নেতা নিরাপত্তাকর্মীদের হেফাজতে নিয়েছেন।
গভর্নর সত্যপাল মালিক গতকাল পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন যে, জুমার নামাজ ও আগামী সপ্তাহের ঈদ উৎসব পালনের জন্য বিধি-নিষেধ নমনীয় করা হবে।
নরেন্দ্র মোদী বৃহস্পতিবার তার কাশ্মিরের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, সোমবার ঈদুল আজহা উদযাপনের সময় লোকেরা যাতে কোনো অসুবিধার সম্মুখীন না হয় তা সরকার নিশ্চিত করবে। জম্মু ও কাশ্মিরের বাইরে থাকা আমাদের বন্ধুদের যারা ঈদে কাশ্মিরে ফিরতে চাইছে, সরকার তাদের সম্ভাব্য সকল সহায়তা দিচ্ছে।'
যোগাযোগ বিচ্ছেদের কারণে, দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বসবাসকারী এই রাজ্যের লোকেরা তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পারছে না। মোদী লকডাউনের মধ্যে জনগণ যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তা স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ থেকে মুক্তি একটি বাস্তবতা। তবে আরেকটি বাস্তবতা হলো সতর্কতামূলক ব্যবস্থার (সরকার গৃহীত) কারণে মানুষ সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। তারাও (সরকার) এর মুখোমুখি হয়েছে।
কাশ্মির উপত্যকায় কারফিউ জাতীয় বিধিনিষেধ সত্ত্বেও বেশিরভাগ প্রবাসী কাশ্মীরি পরিবারের সাথে ঈদ কাটাতে বিমানে করে শ্রীনগরে যাচ্ছে।
-এটি