আওয়ার ইসলাম: কাশ্মিরে কয়েকদিন ধরেই চলছে অচলাবস্থা। বন্ধ হয়ে গেছে স্বাভাবিক খাবার সরবরাহ। নেই বাইরের সঙ্গে যোগাযোগ। ব্যাংক ও এটিএমগুলোতেও টাকা পাওয়া যাচ্ছে না।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে মানুষ। ৭২ ঘণ্টা পার না হতেই দোকানগুলোতেও শেষ হয়ে গেছে খাবার। পণ্যের দাম বেড়ে গেছে বহুগুণ।
রোববার থেকে এ অচলাবস্থায় না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে নিম্নবিত্ত অনেক কাশ্মীরি। এদিকে কাশ্মীরে বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদে ১৪৪ ধারা ভেঙে মিছিলের চেষ্টার সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন পুলিশের ধাওয়া খেয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে ডুবে মারা যান। কাশ্মীরজুড়ে চলছে গণগ্রেপ্তার। খবর জিও টিভি, দ্য টেলিগ্রাফ, বিবিসি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।
খবরে বলা হয়, পুলিশের ধাওয়া খেয়ে এক তরুণ ঝিলাম নদীতে ঝাঁপ দেন। পরে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। শ্রীনগর, পুলওয়ামা, বারমুল্লাসহ বিভিন্ন শহরে রাস্তায় নামা বিক্ষোভকারীদের ওপর ভারতীয় সেনাবাহিনী গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়েছে। সব যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে।
বাইরের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করার কোনো উপায় নেই ভেতরের মানুষের। শহর ও গ্রামগুলোর আশপাশে কাঁটাতারের বেড়া দেখা গেছে। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় পুরো অঞ্চলে টিভি চ্যানেল, ফোন সংযোগ এবং ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
মানবাধিকারকর্মীদের মতে, মোদি সরকার মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রেখে আন্দোলনকারী ও বিরোধী পক্ষের নেতাদের গ্রেপ্তার করছে কেন্দ্রীয় সরকার। এ পর্যন্ত রাজনৈতিক নেতাসহ কয়েক শ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লাহও।
অন্যদিকে সমঝোতা এক্সপ্রেস নিয়ে ভারতে আসতে অস্বীকার করছে পাকিস্তানের রেলকর্মীরা। তাদের আশঙ্কা, ভারতে গেলে তারা বিপদে পড়তে পারেন। তাই তারা ওই ট্রেন নিয়ে আসবেন ওয়াঘা সীমান্ত পর্যন্ত। সেখান থেকে ভারতীয় রেলকর্মীরা ট্রেনটিকে ভারতে নিয়ে যাবেন। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ির আমলে চালু হয়েছিল দিল্লি-লাহোর সমঝোতা এক্সপ্রেস।
গত সোমবার ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। জম্মু-কাশ্মীরকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করতে পার্লামেন্টে একটি বিলও পাস করা হয়েছে। এই পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে কাশ্মীরজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত সেনা।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সীমান্তে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে গত মঙ্গলবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন ইমরান খান। তাই নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর আরো বেশি সেনাকে টহল দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।
-এটি