আওয়ার ইসলাম: ভারতীয় সংবিধানের যে ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদে কাশ্মিরকে স্বায়ত্তশাসিত রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে সেটি বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের পর এ ঘোষণা দেন তিনি।
সোমবার (৫ আগস্ট) ভারতের সংসদ শুরু হতেই রাজ্যসভায় সংবিধানের ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দেন অমিত।এতে ৩৭০ ধারার পাশাপাশি ৩৫-এ ধারাও বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। খবর আনন্দবাজার-এর।
ভারতীয় সংবিধানের এ দুই ধরা বাতিল করে কাশ্মিরকে ভেঙে দুই টুকরো করার ঘোষণা দিয়েছেন অমিত শাহ। কাশ্মির ভেঙে নতুন দুই রাজ্য হবে জম্মু-কাশ্মির ও লাদাখ।
৩৭০ ধারা তুলে নিতে দেরি করা উচিত হবে না বলেও মন্তব্য করেন অমিত শাহ। তিনি জানান, কাশ্মির রাজ্যের মর্যাদা হারানোর পর জম্মু-কাশ্মির ও লাদাখ হবে ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। বিলটির ওপর ভোটাভুটি হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যসভার স্পিকার বেঙ্কাইয়া নাইডু।
এদিকে স্বায়ত্তশাসন বাতিল, রাজ্যের মর্যাদা প্রত্যাহার এবং কাশ্মির ভেঙে দুই টুকরো করার ঘোষণা দেওয়ার আগেই অঞ্চলটিতে ব্যাপক সামরিক সমাবেশ করে ভারত। নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতির কথা বলে গত সপ্তাহে কাশ্মিরে আধা সামরিক বাহিনীর অতিরিক্ত ৩৫ হাজারেরও বেশি সদস্য মোতায়েন করা হয়।
নিরাপত্তা বাহিনীর এসব বাড়তি সদস্যদের রাজ্যের রাজধানী শ্রীনগর এবং কাশ্মির উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে এমনকি গ্রামাঞ্চলেও মোতায়েন করা হয়েছে।
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর ও জম্মু অঞ্চলে ১৪৪ ধারা অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে সব স্কুল-কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন তিন মুখ্যমন্ত্রী তথা শীর্ষ নেতা ওমর আবদুল্লাহ, ফারুখ আবদুল্লাহ, সাজ্জাদ লোনক, মেহবুবা মুফতিকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। মোবাইল, ইন্টারনেট, গণমাধ্যম পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, নির্বাচনী ইস্তেহারে বিজেপি জানিয়েছিলো, ক্ষমতায় গেলে ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা দুটি বাতিল করবে তারা। কারণ, এই ধারা দুটি সংবিধানের পরিপন্থী৷ কাশ্মীরে এতোকিছু হওয়ার পেছনে স্বাভাবিক ভাবেই জল্পনা তৈরি হয়েছে, তবে কি কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা অবলুপ্তির পথে যাবে মোদী সরকার? না কি ৩৫এ বাতিল করা হবে?
ন্যাশনাল কনফারেন্সের নেতা ওমর আবদু্ল্লা রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের সঙ্গে দেখা করে তাদের শঙ্কার কথা জানান। পরে ওমর জানান, রাজ্যপাল তাকে বলেছেন, ৩৭০ কিংবা ৩৫এ ধারা বাতিলের কোনও প্রস্তাব তার কাছে নেই৷
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, রাজ্যপালের কথায় পুরোপুরি আশ্বস্ত হওয়া যাচ্ছে না৷ তাই কেন্দ্রীয় সরকারকে সংসদে বলতে হবে, তারা কাশ্মীর নিয়ে কী চাইছে?
রাজ্যের আরেক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিও বলেছেন, মনে হচ্ছে, বড় কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে৷
উল্লেখ্য, কে জম্মু–কাশ্মীরের স্থায়ী বাসিন্দা এবং কে নয় তা নির্ধারণ করে ৩৫–এ ধারা। সম্পত্তি তৈরির বিশেষ অধিকার এবং সুবিধা পাওয়া যায় এই ধারার ফলে। আর জম্মু–কাশ্মীরকে স্বশাসিত রাষ্ট্রের মর্যাদা দেয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা।
আরএম/