আওয়ার ইসলাম: ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর ও জম্মু অঞ্চলে ১৪৪ ধারা অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে সব স্কুল-কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন তিন মুখ্যমন্ত্রী তথা শীর্ষ নেতা ওমর আবদুল্লাহ, ফারুখ আবদুল্লাহ, সাজ্জাদ লোনক, মেহবুবা মুফতিকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। মোবাইল, ইন্টারনেট, গণমাধ্যম পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
রাজনৈতিক নেতা ও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কাশ্মীরীদের হুমকির মুখে ফেলার জন্য এসব উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এদিকে, রাজ্য প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও সমালোচনা করেছেন গৃহবন্দি দুই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর ও মেহবুবা মুফতি। টুইটারে নিজেদের ক্ষোভ ঝেড়েছেন তারা।
রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা টুইট করে জানান, আমাকে গৃহবন্দী করা হয়েছে। অন্যান্য মূল ধারার রাজনৈতিক নেতাদের ক্ষেত্রেও সম্ভবত একই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
মেহবুবা মুফতি টুইট করে জানিয়েছেন, ‘এই কঠিন পরিস্থিতিতে আমি আশ্বাস দিতে চাই, যাই হোক, আমরা সবাই একসঙ্গে আছি। আমাদের যেটা অধিকার, সেটা পাওয়ার লড়াই থেকে কোনও কিছুই আমাদের সরিয়ে আনতে পারবে না!’
এদিকে, উত্তেজনা বাড়ার মধ্যেই জরুরি বৈঠকে বসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। স্থানীয় সময় আজ সোমবার সকাল সাড়ে নয়টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সঙ্গে এই বৈঠক শুরু হয়।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীরা উপস্থিত রয়েছেন।
একই দিনে নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটিরও বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
এদিকে, কাশ্মীর নিয়ে আজ বেলা ১১টায় রাজ্যসভায় ও বেলা ১২টায় লোকসভায় বিবৃতি দেবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কী বলেন শাহ, সেদিকেই তাকিয়ে সব মহল।
এদিনের এই বৈঠক থেকে কাশ্মীর ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী মোদি বড়সড় সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সন্ত্রাসবাদ একেবারে কাশ্মীর থেকে নির্মূল করতে বড়সড় অভিযানও চালানোর নির্দেশ সরকার দিতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। প্রয়োজনে সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হতে পারে বলে একাধিক জাতীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করছে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার থেকেই আতঙ্কের মধ্যে জীবন কাটাচ্ছেন কাশ্মীরের মানুষ। হাজার হাজার মানুষ বাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছেন। কেউ কেউ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র জোগাড় করে রাখছেন।
সরকার বিবৃতি দিয়ে পর্যটকদের কাশ্মীর ত্যাগ করতে বলেছে। তার ওপর নতুন করে হাজার হাজার সেনা (৩৫ হাজার সৈন্য) মোতায়েন করা হয়েছে ভারতের ওই রাজ্যে। প্রশ্ন উঠেছে কী ঘটতে চলেছে কাশ্মীরে।
গত শনিবার কাশ্মীরে থাকা পর্যটক ও অমরনাথ যাত্রায় অংশ নেওয়া হিন্দু তীর্থ যাত্রীদের কাশ্মীর ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়। বাড়তি আধাসামরিক বাহিনীর সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ভারত সরকারে পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পেরেছে হামলা হতে পারে কাশ্মীরে।
আরএম/