আওয়ার ইসলাম: ট্রেনে ভ্রমণকারী নারীদের আর পুরুষ যাত্রীদের ভিড় ঠেলে বা তাদের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে বা বসে আর যেতে হবে না। আন্তঃনগর, মেইল বা লোকাল- সব ট্রেনে যুক্ত হচ্ছে আলাদা কোচ।
সেইসঙ্গে বর্তমানে ব্যবহৃত সব কোচে থাকবে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার (শিশুসন্তানদের স্তন্যপান করানোর জন্য নির্ধারিত স্থান) ও আলাদা টয়লেট। পরিকল্পনা করা হচ্ছে ৩০ শতাংশ আসন সংরক্ষণেরও।
২০১৯-২০ জেন্ডার বাজেট প্রতিবেদনে রেলপথে নারীসেবা নিশ্চিত করতে বিশেষ সুপারিশ করা হয়েছে। রেলকে নারীবান্ধব করতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণেরও সুপারিশ রয়েছে। এসব সুপারিশ বাস্তবায়নে কাজ করছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
সূত্রমতে, বর্তমানে ৩৫৩টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করছে। যার ৯৪টি আন্তঃনগর। এর মধ্যে বর্তমানে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলা একটি লোকাল ট্রেনে নারীদের জন্য আলাদা কোচ রয়েছে। ঢাকা-আখাউড়া রুটে চলমান তিতাস কমিউটার ও ঢাকা-জয়দেবপুর রুটে চলমান জয়দেবপুর কমিউটার ট্রেনে দু-এক সপ্তাহের মধ্যে নারীদের জন্য যুক্ত হতে পারে একটি করে পৃথক কোচ।
সূত্র জানায়, নতুন আসা ব্রডগেজ কোচগুলোতে আধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে। এসব কোচ দিয়ে পরিচালিত ট্রেনগুলোতে নারীদের জন্য একটি কোচ বরাদ্দ রাখা ও অন্যান্য প্রতি বগিতে একটি টয়লেট নারীদের জন্য রাখার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সূত্র আরও জানায়, প্রতিটি বগিতে দুই বা তিনটি সিট নিয়ে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার করা হচ্ছে। ওই আসনগুলো পর্দা দিয়ে ঢাকা থাকবে। চলমান ট্রেনগুলোর সব কটিতে ক্রমান্বয়ে এসব সুবিধা স্থাপন করা হবে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (রোলিং স্টক) সামছুজ্জামান বলেন, সব ট্রেন নারীবান্ধব করতে কাজ শুরু করেছি। ক্রমান্বয়ে নারী কোচ যুক্ত হবে, ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার ও পৃথক টয়লেটের ব্যবস্থা করা হবে। ২/১ বছরের মধ্যে বেশকিছু আধুনিক যাত্রীবাহী কোচ আনা হচ্ছে। তখন আমাদের পরিকল্পনাগুলো আরও ভালোভাবে বাস্তবায়ন করতে পারব।
তিনি বলেন, প্রথমে প্রতিটি ট্রেনে একটি করে নারী কোচ দেয়া হলেও পরে চাহিদা অনুযায়ী দুটি করে দেয়া হবে। এ ছাড়াও প্রতিটি স্টেশনে পর্যাপ্ত নারী নিরাপত্তাকর্মী নিশ্চিত করা হবে। কাউন্টার বাড়ানো হবে। বাড়ানো হবে বিশ্রামাগারসহ টয়লেট।
রেলপথমন্ত্রী মুহা. নূরুল ইসলাম সুজন জানান, রেলপথকে আমরা আধুনিক করে সর্বোচ্চ যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে চাই। রেলপথ হবে শতভাগ নারীবান্ধব। এ জন্য প্রতিটি ট্রেনে নারী কোচ যুক্ত করা হচ্ছে। ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার ও পৃথক টয়লেটেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা প্রণয়ন ও কৌশল নির্ধারণে নারীনীতি-২০১১ আদলে ট্রেনে নারীদের জন্য ৩০ শতাংশ আসন সংরক্ষণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
-এএ