ইকবাল আজিজ, কক্সবাজার প্রতিনিধি
সরকারের দেওয়া ৯ শর্তে আজ শনিবার আত্মসমর্পণ করেছেন কক্সবাজারের সাবেক এমপি বদির তিন ভাইসহ ১০২ ইয়াবা ব্যবসায়ী। এ সময় তারা ৩ লাখ ৫০ হাজার ইয়াবা ও ৩০টি দেশীয় পিস্তল জমা দেন।
দুপুর ১২টার দিকে টেকনাফ পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এ আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান হয়।
আজ ৩০ গডফাদার ও ৭২ ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেছেন।এর আগে পৌনে ১১টায় আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ ছাড়া বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দিন, উখিয়া-টেকনাফের সংসদ সদস্য শাহিন আক্তার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন ও জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন ও টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ আইনৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। জেলার তিন সংসদ সদস্যও ছিলেন সেখানে।
আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে কয়েকজন হলেন- রবিউল ইসলাম, মনসুর আলী, খালেদ হোসেন, মো. আলম, মো. রাসেল, নুরুল আমিন, বোরহান উদ্দিন প্রমুখ।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘সেফহোম’ থেকে শীর্ষ ইয়াবাকারবারিদের কক্সবাজারের টেকনাফে আত্মসমর্পণ মঞ্চে আনা হয়। মঞ্চের কাছে একটি দোতলা ভবনে তাদের রাখা হয়। আত্মসমর্পণকারীদের দেখতে তাদের স্বজন ও এলাকার হাজারো মানুষ ভিড় জমান।
তালিকাভুক্ত কয়েকজন ইয়াবা কারবারিকেও অনুষ্ঠানস্থলে দর্শক হিসেবে কাছে দেখা গেছে।পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, আত্মসমর্পণকারী ১০২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ীর মধ্যে অন্তত ৩৫ জন গডফাদার রয়েছেন। আত্মসমর্পণকৃতদের বিরুদ্ধে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারের মামলা হবে।
আত্মসমর্পণকারীদের ইয়াবা ব্যবসায়ীদের দেয়া হয়েছে নয় শর্ত। শর্তগুলো হলো-
১. নিজের হেফাজতে থাকা সকল ইয়াবা ও অবৈধ অস্ত্র পুলিশের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।
২. আত্মসমর্পণের আগে দায়ের হওয়া মামলা ও বিচার কার্যক্রম স্বাভাবিক নিয়মে চলবে।
৩. ইয়াবা ব্যবসায় নিজের/পরিবারের সদস্য বা আত্মীয়-স্বজনের নামে-বেনামে অর্জিত সকল সম্পদ দুদক, সিআইডির মানি লন্ডারিং শাখা ও এনবিআরের মাধ্যমে যাচাই করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
৪. আত্মসমর্পণ পক্রিয়ায় দায়ের হওয়া মামলায় সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে সহায়তা প্রদান করা হবে।
৫. যে সকল মাদক ব্যবসায়ী এখনো সক্রিয় তাদের ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে হবে।
৬. আইনি পক্রিয়ায় মুক্ত হলে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার পাশাপাশি নিজ নিজ এলাকায় মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ড করতে হবে।
৭. ভবিষ্যতে কখনো মাদক ব্যবসা সংক্রান্ত অপরাধে জড়িত হওয়া যাবে না।
৮. আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়ায় তাদের বিরুদ্ধে যে মামলাটি রুজু হবে, সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে তাদেরকে আইনগত সুবিধা প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
৯. মাদক ব্যবসার মাধ্যমে নিজের পরিবারের আত্মীয় স্বজনের নামে ও বেনামে অর্জিত সকল স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি যাচাইয়ের জন্য দুদক, (সিআইডিমানিলন্ডারিং শাখা) এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি সকল সংস্থার নিকট তাদের তথ্যাদি প্রেরণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট সংস্থার মাধ্যমে তাদের অর্জিত সকল স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি যাচাই সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরআর