আবদুল্লাহ তামিম: ফেনী জেলার ফুলগাজী আশরাফিয়া মাদরাসার মুহতামিম ও মহা পরিচালক আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুফতি হাবিবুর রহমান গতকাল শুক্রবার রাতের ০৩.৪০ মিনিটে ইনতেকাল করেছেন।
আজ শনিবার বাদ আছর ফুলগাজী আশরাফিয়া মাদরাসার ময়দানে মরহুমের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার নামাজে হযরতের অত্মীয়-স্বজন ছাড়াও আশ-পাশের প্রায় চার গ্রামের লোক সমবেত হয় বলে জানায় মাদরাসারই একজন শিক্ষক। তিনি বলেন, হযরতের শত শত ছাত্র ও ভক্তবৃন্দ জানাজার নামাজে উপস্থি হয়েছেন।
আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুফতি হাবিবুর রহমান তিনি একজন নিভৃতচারী আলেম ও আল্লাহওয়ালা বুযুর্গ ছিলেন। এ আল্লাহওয়ালা মৃত্যুর সময় সাত ছেলে ও তিনজন মেয়ে আর স্ত্রী রেখে গেছেন। তার বয়স হয়েছিলো প্রায় ৭৫ বছর।
তিনি ফেনী জেলার তানযীমুল মাদারিসিল কওমিয়ার সেক্রেটারির পদে দাঢিত্ব পালন করেন দীর্ঘ দিন। ফেনী জেলা কওমি মাদরাসাগুলোর অন্যতম মুরুব্বীও ছিলেন তিনি। তার লিখিত অনেক বই-পুস্তক কিতাবাদি আছে। বিভিন্ন শিক্ষা সেমিনারে তার বক্তব্যগুলো শিক্ষার্থীদের জীবনের মোড় ঘুড়িয়ে দেয়ার জন্য যতেষ্ট ছিলো বলে জানা যায়।
এদিকে আওয়ার ইসলাম টুয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধানসম্পাদক, বাংলাদেশ ইসলামি ফিকহ একাডেমির মহা-সচিব, মাদানী কুতুবখানার সত্তাধিকারী, বিশিষ্ট আলেমে দীন মুফতি আমিমুল ইহসান শোক প্রকাশ করে বলেন, আমি হজরতকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে।
আমার আত্মীয়ও ছিলেন তিনি। নিঃসন্দেহে তিনি একজন আল্লাহওয়ালা বুযুর্গ ছিলেন। আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতের উঁচু মাকাম দান করুন। তার পরিবারকে সবরে জামিল নসিব করুন।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এক বিবৃতিতে তার ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করে বলেছেন, তিনি দেশের একজন খ্যাতনামা সাহসী আলেম ছিলেন। নাস্তিক্যবাদী ও খোদাদ্রোহী গোষ্ঠীর মুকাবিলায় সোচ্চার ছিলেন।
হাফিজ্জী হুজুর রাহ. এর খলিফা এবং ইদ্রিস কান্ধলভী রহ. এ সুযোগ্য শাগরেদ আজীবন বাতিলের বিরুদ্ধে সংগ্রামী ভূমিকা পালন করেছেন। হেফাজতের নাস্তিক বিরোধী আন্দোলনে আন্তরিক সহযোগী ছিলেন।
আল্লামা বাবুনগরী বলেন, মুফতি হাবিবুর রহমানের ইন্তেকাল আমরা একজন বুযুর্গ আলেমকে হারালাম। তিনি দ্বীনি শিক্ষা বিস্তারে অনেক অবদান রেখেছেন।
নিজের সাত সন্তানকে কুরআন হাদীসের তালিম শিখিয়ে আলেম বানিয়েছেন। তিনি ফেনীর কওমী মাদরাসা সমূহের অন্যতম মুরুব্বি ছিলেন। দল-মত নির্বিশেষে সর্বস্তরের জনগণ তাকে সম্মান করতেন।
আল্লামা বাবুনগরী আরো বলেন, আমি দোয়া করি মহান আল্লাহ তাআলা যেন মরহুমের নেক আমালগুলো কবুল করতঃ তাকে মাগফেরাত করেন এবং জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করেন।
এছাড়াও মুফতি হাবীবুর রহমানের ইন্তেকালে ফেনী জেলার ইশা ছাত্র আন্দোলনও শোক প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে তারা বলেন, ফেনী জেলা তানযীমুল মাদারারিস ও বেফাক ফেনী শাখার সম্মানিত সেক্রেটারী, ফুলগাজি আশরাফিয়া মাদরাসার সু-যোগ্য মুহতামিম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ফেনী জেলা শাখার সাবেক দীর্ঘদিনের সভাপতি, শাইখুল হাদিস, আল্লামা মুফতি হাবীবুর রহমান সাহেব এর ইন্তেকালে ইশা ছাত্র আন্দোলন ফেনী জেলা সভাপতি, ছাত্রনেতা আতাউল্লাহ কবীর ভূঁইয়া ও সাধারন সম্পাদক, মুহাম্মদ সাইদুল হক সিরাজী গভীর শোক ও বেদনা প্রকাশ করেছে।
নেতৃদ্বয় বলেন, মুফতি সাহেব হুজুরের ইন্তেকালে ফেনীর ওলামায়ে কেরাম এক ছায়াতুল্য অভিভাবক হারিয়েছে। জাতি হারিয়েছে এক অনন্য রাহবার।
হযতরের জীবন-কর্ম ধর্মপ্রান মুসলমানদের জন্য অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে থাকবে দীর্ঘকাল। আমরা মহান আল্লাহ তা'আলার দরবারে হযরতের জান্নাতে সু-উচ্চ মাকাম কামনা করছি, আমিন।
-এটি