রকিব মুহাম্মদ
আওয়ার ইসলাম
চীনের ‘কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স সেন্টার’ নামের একটি গোপন ক্যাম্পে ১০ লাখ সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমকে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে। জাতিসংঘের একটি মানবাধিকার সংগঠন এ বিষয়ে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পেয়েছে।
সংগঠনটি বলছে, চীন ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমকে ‘কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স সেন্টার’এ আটক করে রেখেছে বলে তাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য খবর রয়েছে।খবর বিবিসির।
শুক্রবার (১১ আগস্ট) জাতিগত বৈষম্য বিলোপ সংক্রান্ত জাতিসংঘের কমিটির সদস্য গে ম্যাকডাউল এই দাবির কথা জানান। জেনেভায় শুরু হওয়া সম্মেলনের আগে তিনি এই মন্তব্য করেছেন।
ম্যাকডাউল বলেন, চীনের পশ্চিমাঞ্চলের স্বায়ত্তশাসিত ঝিনঝিয়াং অঞ্চলে ১০ লাখ উইঘুর সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে জোর করে ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে। এ ধরনের অভিযোগের অনেক বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ আমাদের কাছে এসেছে, যা রীতিমতো উদ্বেগজনক। শধু তাই নয়, উইঘুর জাতি এবং অন্যান্য তুর্কি মুসলিম সংখ্যালঘুদের গণ গ্রেফতারের খবর আছে।
ম্যাকডাউল আরও বলেন, উইঘুর সম্প্রদায় এবং অন্যান্য মুসলমানদের শুধুমাত্র তাদের ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে ‘রাষ্ট্রের শত্রু’হিসেবে দেখা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, মিসর এবং তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ থেকে চীনে ফিরে আসা ১০০ উইঘুর ছাত্রকে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে, এদের কয়েকজন আটক থাকা অবস্থায় মারাও গেছেন। অবশ্য অভিযোগ ও প্রমাণের তথ্যসূত্র সম্পর্কে কিছু বলেননি তিনি।
৫০ সদস্যের এই প্রতিনিধি দলটি জানিয়েছে, তারা সোমবার জেনেভায় অধিবেশন চলাকালে এ বিষয়টি তুলে ধরবে। এর আগে অবশ্য বেইজিং এ ধরনের কোনও শিবিরের অস্তিত্ব অস্বীকার করেছিল।
জাতিগত সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলমানরা সাধারণত চীনের জিনজিয়াং প্রদেশেই বসবাস করেন। সেখানকার জনসংখ্যার প্রায় ৪৫ ভাগই উইঘুর মুসলিম। তিব্বতের মতো জিনজিয়াং প্রদেশও আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের ভেতর অবস্থিত একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল।
গেল কয়েক মাস ধরেই এমন খবর শোনা যাচ্ছে যে, জিনজিয়াংয়ে উইঘুর সম্প্রদায় ও অন্যান্য সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজনকে আটক করছে চীনা কর্তৃপক্ষ।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বিভিন্ন মানবাধিকার গ্রুপ জাতিসংঘের কমিটির কাছে যে প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে দেখা গেছে কর্তৃপক্ষ সংখ্যালঘু মুসলিমদের ব্যাপকভাবে বন্দি বানাচ্ছে। তারা বলছে, এইসব শিবিরে বন্দি ব্যক্তিদের জোর করে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের প্রতি বিশ্বস্ত হতে শপথ করানো হয়।
ওয়ার্ল্ড উইঘুর কংগ্রেস জানিয়েছে, বন্দিদের কোনও ধরনের অভিযোগ ছাড়াই অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখা হয় এবং তাদের কমিউনিস্ট পার্টির স্লোগান দিতে বাধ্য করা হয়। তারা জানাচ্ছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব বন্দিদের ঠিকমতো খাবার খেতে দেয়া হয় না এবং তাদের ওপর নির্যাতনও চালানো হয়।
সংগঠনটি আরও জানাচ্ছে, অধিকাংশ বন্দির ক্ষেত্রেই যেহেতু কোনও অভিযোগ গঠন করা হয় না তাই তারা কোনও আইনি সহায়তাও পান না। অভিযোগ রয়েছে, ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলে এ ধরনের বন্দি শিবির চালাচ্ছে চীন।
আরও পড়ুন: মসজিদ ভাঙ্গা ঠেকাতে চীনে আন্দোলনে নেমেছে মুসলিমরা
[ব্যবসার যাবতীয় কাজ সহজ করতে এলো বিসফটি। এখনই রেজিস্ট্রেশন করুন বিসফটি।]
আরএম/