বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

তাবলিগ বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্তে মাযাহিরে উলুম সাহরানপুর

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

তাওহীদ আদনান
দেওবন্দ প্রতিনিধি

সম্প্রতি ভারতের উত্তর প্রদেশস্থ সাহরানপুর জেলার মাযাহিরে উলুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে মাদরাসার মজলিসে শুরার বৈঠক৷ বছরের প্রথম মজলিসে শুরা হিসেবে এতে আলোচনা হয় মাদরাসার পুরো বছরের পড়া-লেখার উন্নতি ও অগ্রগতির পথ ও পন্থা নিয়ে৷

পুরো বছর মাদরাসা পরিচালনার পদ্ধতি নিয়েও আলোকপাত হয় বিশেষভাবে৷

পড়ালেখার উন্নতি ও অগ্রগতির অংশ হিসেবে আলোচনায় আসে বর্তমান সময়ের চলমান নিজামুদ্দীন ইস্যু৷ আলোচনার পরে সর্ব সম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয় নিজামুদ্দীন মারকাজের বিষয় সমাধানে না আসা পর্যন্ত নিজামুদ্দীন মারকাজের অনুসরণ করা হবে না সাহরানপুরে৷

মাযাহেরে উলুমের ইফতাহ বিভাগের শিক্ষার্থী মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ মু'তী আওয়ার ইসলামকে বৈঠকটির বিষয়ে নিশ্চিত করেন।

মজলিসে শুরার আলোচনায় নিজামুদ্দীনের বিষয়টি দেওবন্দের সাথে অমিমাংসিত থেকে যাওয়ার দরুন ফেতনার আশঙ্কা হিসেবে উল্লেখ করেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেন মজলিসে শুরার সদস্যগণ৷

শুরার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় মাযাহিরে উলুমের ভেতরে দাওয়াত ও তাবলীগ কেবল মাওলানা মুহাম্মদ ইলয়াস রহ., মাওলানা মুহাম্মদ ইউসুফ রহ. ও মাওলানা মুহাম্মদ এনআমুল হাসান রহ. এর মানহাজ ও পদ্ধতি অনুসারেই পরিচালিত হবে। উল্লেখিত আকাবিরদের পদ্ধতির বাইরে ভিন্ন কোনো পদ্ধতি অনুসারে কোনো তাবলীগ চলবে না সাহরানপুরে৷

তাবলীগ জামাতের উল্লেখিত আকাবিরদের মানহাজ ও পদ্ধতিতে সাহরানপুরে তাবলীগ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন শায়েখ জাকারিয়া রহ. জামাতা ও সাহরানপুর মাদরাসার শাইখুল হাদীস মাওলানা মুহাম্মদ আকিলব, মাদরাসার মহাপরিচালক মাওলানা মুহাম্মদ সালমান এবং শায়েখ জাকারিয়া রহ. এর নাতী ও মাদরাসার জেনারেল সেক্রেটারী মাওলানা মুহাম্মদ শাহেদ৷

এ তিন উস্তাদের নেগরানীতেই সাহরানপুরে আকাবিরদের পদ্ধতিতে তাবলীগের কাজ পরিচালিত হওয়ার সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে৷

উল্লেখ্য, মাওলানা মুহাম্মাদ সালমান হলেন মাওলানা সা'দ কান্ধলভীর শ্বশুর। যার তত্ত্বাবধানে সাদ কান্ধলভীর আপত্তিকর বয়ানের পক্ষে ও দেওবন্দের ওয়াজাহাতনামার বিপক্ষে পুস্তিকা রচিত হয়েছিল৷ যেই পুস্তিকার খণ্ডন অবশ্য পরবর্তীতে দেওবন্দসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকেও করা হয়েছিলো৷

মজলিসে শুরার বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, হারদূই হযরতের খলিফা আলহাজ্ব হাকীম কালীমুল্লাহ, ইসলামী ফিকাহ একাডেমি আবুধাবির সদস্য মাওলানা ত্বকীউদ্দিন নদভী মাযাহেরী, সাহরানপুর মাদরাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা মুহাম্মদ আকিল, জামিয়া আকালকুয়া মুম্বাইয়ের প্রিন্সিপাল মাওলানা গোলাম মুহাম্মদ বাস্তানভী, মাওলানা মুফতি মাসুম রায়চুটি, মাওলানা মুফতী সাবীল আহমদ, মাওলানা মুহাম্মদ আরিফ বারাহেমী, গোলাম রাফে জামাল শেরওয়ানী, শায়খ ইবরাহীম গুজরাটি, মাওলানা সাইয়্যেদ মুহাম্মদ শাহেদ সাহারানপুরী ও মাওলানা মুহাম্মাদ সালমান, মহাপরিচালক সাহরানপুর।

উল্লেখ্য, বৈঠক শেষে মজলিসে শুরার পক্ষ থেকে মাদরাসার লেটার পেডে একটি নোটিশ জারি করা হয়৷ নোটিশের নিচে মাওলানা সা'দ কান্ধলভীর শ্বশুর ও সাহরানপুর মাদরাসার মহাপরিচালক মাওলানা মুহাম্মাদ সালমান-এর সাক্ষর রয়েছে৷

এ বৈঠকে সম্মিলিতভাবে বেশকিছু প্রস্তাব গৃহিত হয়। এগুলো হলো, এখন (মাযাহিরে উলুমের ভিতরে) শুধু ফাযায়েলে আমল পড়া হবে। মারকায ও শুরার সিদ্ধান্ত থেকে সরে মাযাহিরে উলুমের ভেতরে দাওয়াতের মেহনত হযরত মাওলানা মুহাম্মদ ইলয়াস রহ., হযরত মাওলানা মুহাম্মদ ইউসুফ রহ. ও হযরত মাওলানা মুহাম্মদ এনআমুল হাসান রহ. এর মানহাজ ও পদ্ধতি অনুসারে পরিচালিত হবে। মাওলানা মুহাম্মদ আকেল, মাওলানা মুহাম্মদ সালমান ও (মাওলানা) মুহাম্মদ শাহেদ সাহেবের নেগরানিতে মেহনত পরিচালিত হবে।

বৈঠকে দাওয়াতের মেহনতের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছাত্রদের এ সিদ্ধান্তের ওপর পূর্ণ সততার সঙ্গে আমল করার নির্দেশও দেয়া হয়।

-আরআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ