রকিব মুহাম্মদ
আওয়ার ইসলাম
দখলীকৃত পশ্চিম তীরে ইসরাইলের নৃশংসতা বিশ্বের কাছে যথাযথভাবে তুলে ধরা হয় না। বিশ্ববাসী ঠিকমতো জানতে পারে না আসলে কি ঘটছে ফিলিস্তিনে বা পশ্চিম তীরে। সারা দুনিয়ার মানুষকে সেই অজানা কাহিনী জানানোর জন্য পশ্চিম তীরের একটি শিশু কন্যা বেছে নিয়েছে সাংবাদিকতা।
তাকে সবাই জান্না জিহাদ নামেই চিনে। মূল নাম জান্না তামিমি। বয়স , সবে ১২ বছর চলছে। অথচ বিশ্বের সাংবাদিকতা জগতে তার নামটি ইতিমধ্যে সবার কাছে পরিচিত হয়ে গেছে।
স্থানীয় শিশুদের নিয়ে নিয়মিতভাবে সে ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে। মাত্র ৭ বছর বয়সে তার গ্রামে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো সে ভিডিওতে ধারণ করা শুরু করে।
কেন সাংবাদিকতাকে বেছে নিচ্ছে এত্ত ছোট শিশু? এমন জিজ্ঞাসার জবাবে সে বলেছে, ফিলিস্তিনিদের কথা বিশ্বের কাছে তুলে ধরা সাংবাদিকের সংখ্যা খুব বেশি নয়। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি কেন সেই কাজটি করি না এবং বিশ্বকে কেন আমি দেখাই না যে, আমার গ্রামে কি হচ্ছে।
বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ওয়াক টুগেদার নামের একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিল সে।
সেখানে এক বক্তৃতায় জান্না জানায়, আমরা কখনই বলতে চাই না যে আমরা ভুক্তভোগী। যদিও আমরা বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার। কিন্তু আমরা দাবি করছি- আমরা হচ্ছি সেই মানুষ, যারা স্বাধীনতা, সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লড়াই করছি।
তার প্রজন্ম ফিলিস্তিনকে স্বাধীনতা এনে দিতে পারবে বলে বিশ্বাস করে এ ফিলিস্তিনি শিশুটি। তার দাবি হচ্ছে- প্রতিটি শিশুকে শান্তি বসবাস করতে দিন। শৈশব কেমন হতে পারে, সেটি বোঝার সুযোগটুকু তাদের দিন।
জান্না সব সময় বলে, ক্যামেরাই আমার অস্ত্র। বন্দুকের চেয়েও তা শক্তিশালী। আমি এগুলো অল্প মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারি। তারা তা ছড়িয়ে দেয় অন্যদের কাছে। জান্না’র মা নাওয়াল তামিমি মেয়েকে নিয়ে যেমন গর্ব করেন, তেমনি তার জীবন নিয়ে তিনি সঙ্কিত।
উল্লেখ্য, বিশ্বে এখন যতজন যুবক, কিশোর বা শিশু সাংবাদিক আছে তার মধ্যে জান্না জিহাদ আয়াদ অন্যতম। তবে তার পরিবারে এ পেশায় কেউ নেই। আছেন একজন আত্মীয় বিলাল তামিমি। তিনি একজন ফটোগ্রাফার। তিনি নবী সালেহ গ্রামে ইসরাইলি সেনাদের নৃশংসতার ছবি ধারণ করেন। তাকে দেখেই জান্না সাংবাদিকতায় উৎসাহিত হয়েছে।
আরও পড়ুন : কেন ফিলিস্তিনি যুবককে তুর্কি পতাকায় দাফন?