আওয়ার ইসলাম: কুষ্টিয়ার আদালত প্রাঙ্গণে দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের উপর সন্ত্রাসী হামলার কঠোর নিন্দা ও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে দায়ীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তি দাবী করেছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম।
দলটির সভাপতি আল্লামা আব্দুল মুমিন শায়েখে ইমামবাড়ি ও মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী এক বিবৃতিতে বলেন, কুষ্টিয়ার পুলিশ প্রশাসন দৃশ্যত ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের এই হামলার সুযোগ করে দিয়েছে।
হামলার বেশ কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে সন্ত্রাসীদের প্রকাশ্য সশস্ত্র মহড়া এবং আক্রান্তদের পক্ষ থেকে বার বার প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়া সত্ত্বেও কার্যকর কোন উদ্যোগ না নিয়ে উপরন্তু নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে পুলিশ প্রশাসন যেন মাহমুদুর রহমানকে সন্ত্রাসীদের হাতে তুলে দিয়েছেন।
জনসাধারণের মনে পুলিশের এমন দলবাজি ভূমিকায় গভীর উদ্বেগ, আতংক ও ক্ষোভ তৈরি করেছে।
উল্লেখ্য, কুষ্টিয়ায় একটি মানহানি মামলায় জামিন নিতে গিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলার শিকার হয়েছেন আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। হামলায় তাঁর মাথা ও মুখ জখম হয়েছে। এ ছাড়া তাঁকে বহনকারী গাড়িটি ভেঙে দেয় হামলাকারীরা।
বিবৃতিতে জমিয়ত শীর্ষ নেতৃদ্বয় আরো বলেন, মাহমুদুর রহমান হামলার আশঙ্কা বুঝতে পেরে আদালতের কাছে নিরাপত্তা চাইলে আদালত থানার ওসিকে ডাকেন। পরিস্থিতির ভয়াবহতায় আদালত থেকে পুলিশি নিরাপত্তা চাওয়া হলেও এই সরকারের পুলিশ কোনো ব্যবস্থা তো গ্রহণ করেইনি, বরং নিরাপত্তাহীনতায় আদলতের আশ্রয়ে থাকা মাহমুদুর রহমানকে কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি নিরাপত্তা দেয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে আদালত থেকে বের করে দেয়।
এরপর সন্ত্রাসীরা হামলা শুরু করলে উপস্থিত পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে কার্যত: সন্ত্রাসীদের হামলার সুযোগ করে দেয়। তারা বলেন, এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় দলীয় সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনও এই হামলার দায় কোনভাবেই এড়াতে পারে না।
বিবৃতিতে জমিয়ত নেতৃদ্বয় আরো বলেন, নানা ঘটনাপ্রবাহে এটা জনগণের কাছে স্পষ্ট হয়ে পড়েছে যে, রাষ্ট্রযন্ত্র জনগণের সাথে নিরপেক্ষ আচরণ করছে না। রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান কোন রাখঢাক ছাড়াই ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ হয়ে সাধারণ জনতার সাথে বৈরি আচরণ শুরু করেছে। ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ কোটা সংস্কার আন্দোলনেও আমরা পুলিশের এমন ভূমিকা লক্ষ্য করছি। স্বাধীন দেশের জন্য এটা অত্যন্ত ভয়াবহ ও উদ্বেগজনক।
জমিয়ত নেতৃদ্বয় মাহমুদুর রহমানের উপর হামলার ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দায়ীদের গ্রেফতার ও বিচার দাবী করেন। তারা সরকারের প্রতি প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে দেয়ার আহবান জানিয়ে আরো বলেন, এই দেশ আওয়ামীলীগের একার নয়।
এই দেশ সকল রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকসহ ১৭ কোটি আমজনতার। নগ্ন দলবাজি এবং অন্যায়ভাবে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য জুলুম-অত্যাচারে প্রশাসন ও রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বিশ্বের কোন স্বৈরাচারি ও ফ্যাসিবাদি শাসক ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে পারেনি। সকল জালেম শাহীকে একটা সময়ে অবশ্যই বিচারের কাঠ গড়ায় দাঁড়াতে হয়।
সুতরাং সরকারের কর্তব্য, সকল জুলুম-অত্যাচার ও ফ্যাসিবাদি আচরণ পরিহার করে জনগণের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে ন্যায় ও ইনসাফের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করে স্বাধীনতার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সমুন্নত রাখা।
নিন্দা ও ঘৃণা: জাতির পতন এভাবেই আসে
ইসলাম ও দেশের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত আছি: মাহমুদুর রহমান
-আরআর