মুফতি আবদুল্লাহ তামিম: পৃথিবীর সব মানুষই আল্লাহর সৃষ্টি। হিজড়া সম্প্রদায়ও আল্লাহ তায়ালারই বান্দা বা বান্দি। তারাও আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃষ্টির সেরা জীব। তারাও মানুষ। আমাদের মতই মানুষ। তবে যেমন অনেক মানুষের শারিরিক ত্রুটি থাকে।
এটিও তাদের তেমনি একটি ত্রুটি। এ ত্রুটির কারণে উক্ত ব্যক্তি মনুষত্ব থেকে বেরিয়ে যায় না। বরং অন্যান্য প্রতিবন্ধিদের মতই তারা আরো বেশি স্নেহ, মমতা ও ভালবাসা পাবার অধিকার রাখে।
হিজড়াদের ঘৃণা নয় ভালবাসা ও স্নেহ দিয়ে সম্মানের সাথে বাঁচতে দেয়া উচিত। তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করা, খারাপ মন্তব্য করা মারাত্মক গোনাহের কাজ।
মৌলিকভাবে ইসলামে পুরুষ ও নারীকেই গণ্য করে থাকে। আর যারা উভলিঙ্গ হয়ে থাকেন তারাও মূলত হয় নারী হোন বা পুরুষ হয়ে থাকেন। তাই তাদের ব্যাপারে আলাদা কোন বিধান আরোপ করা হয়নি।
যে উভলিঙ্গের অধিকারী ব্যক্তির মাঝে যেটি বেশি থাকবে, তিনি সেই প্রজাতির অন্তর্ভূক্ত হবেন। পুরুষের ভাব বেশি থাকলে পুরুষ, নারীর ভাব বেশি থাকলে নারীর বিধান প্রযোজ্য হবে। তাই তাদের ব্যাপারে আলাদা কোন বিধান আরোপ হবার প্রয়োজনই নেই।
হযরত আলি রা. কে এমন বাচ্চা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়, যার ছেলে বা মেয়ে হওয়া পরিস্কার নয়। তখন হযরত আলী রা. বললেন, সে যেভাবে পেশাব করে সে হিসেবে মিরাস পাবে। (সুনানে বায়হাকি কুবরা-১২৯৪, কানযুল উম্মাল-৩০৪০৩)
হিজড়াদের ক্ষেত্রে বিধান হল তাদের নারী বা পুরুষের যে কোন একটি ক্যাটাগরিতে ফেলতে হবে। রাসূল সা. এ ব্যাপারে একটি মূলনীতি নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সেটা হল, দেখতে হবে হিজড়ার প্রশ্রাব করার অঙ্গটি কেমন? সে কি পুরুষদের গোপনাঙ্গ দিয়ে করে? না নারীদের মত গোপনাঙ্গ দিয়ে পেশাব করে?
গোপনাঙ্গ যাদের মত হবে হুকুম তাদের মতই হবে। অর্থাৎ গোপনাঙ্গ যদি পুরুষালী হয়, তাহলে পুরুষ। যদি নারীর মত হয়, তাহলে নারী। আর যদি কোনটিই বুঝা না যায়।
তাহলে তাকে নারী হিসেবে গণ্য করা হবে। সেই হিসেবেই তাদের উপর শরয়ি বিধান আরোপিত হবে। সুতরাং ইসলামে হিজড়াদের ব্যাপারে কিছু বলা নাই বলাটা মুর্খতা বৈ কিছু নয়। (মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক-১৯২০৪)
‘ইসলামে একসঙ্গে তিন তালাক নেই; সমাজ ভুল ধারণায় বসে আছে’