রকিব মুহাম্মদ
আওয়ার ইসলাম
প্রতি বছর রহমত, মাগফিরাত ও মুক্তির সুমহান বার্তা নিয়ে মুসলিম উম্মাহর মাঝে আগমন করে রমজান মাস। প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম নর-নারীর জন্যই পবিত্র রমজানের পুরো মাস সিয়াম পালন করা ফরজ।
মাহে রমজানের মর্যাদাকে কাজে লাগিয়ে কদর রাত প্রাপ্তির সুনিশ্চিত প্রত্যাশায় সর্বোপরি মহান আল্লাহর একান্ত সান্নিধ্য লাভের জন্য রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফকে সুন্নাত করা হয়েছে।
শরিয়তের পরিভাষায় যেই মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জামাত সহকারে নিয়মিত আদায় করা হয় এমন মসজিদে মহান আল্লাহর ইবাদতের উদ্দেশ্যে নিয়ত সহকারে অবস্থান করাকে ইতিকাফ বলে।
সাধারণত রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতে হয়। কিন্তু, অনেকের ধারণা - রমজানের শেষ ৩ দিন ইতিকাফ করলেও তা আদায় হয়ে যাবে। আদৌও কি এ ধারণা ঠিক? না রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করলে ইতিকাফের হুকুম পরিপূর্ণ হবে? আসুন, জেনে নেওয়া যাক -
রমজানের শেষ দশকের পূর্ণ দশক ইতিকাফ করা সুন্নত। এছাড়া যে কোন সময়, ইচ্ছেমত সময়ের জন্য ইতিকাফ করা যায়। তবে তা সুন্নত ইতিকাফ হবে না। বরং নফল ইতিকাফ হবে।
সুতরাং আপনি যদি রমজানের শেষ দশকের তিন দিন ইতিকাফ করেন, তাহলে তা নফল ইতিকাফ হবে, সুন্নত ইতিকাফ হবে না।
এ সম্পর্কে আব্দুল্লাহ বিন উমর রা. থেকে বর্ণিত বুখারি শরিফের একটি হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন। (বুখারী, হাদীস নং-২০২৫)
এছাড়াও, হযরত আয়শা রা. বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি রমজানের শেষ দশকে মৃত্যু পর্যন্ত ইতিকাফ করেছেন। (বুখারী, হাদীস নং-২০২৫)
হযরত আবূ সাঈদ রা. থেকে বর্ণিত অন্য একটি হাদিস এমন রয়েছে যে তিনি বলেন, আমরা রমজানের মধ্যম দশকে তথা দশ থেকে বিশ তারিখ পর্যন্ত রাসূল সা. এর সাথে ইতিকাফ করেছিলাম। (সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২০৪০, ১৯৩৫)
সুতরাং, লোকমুখে প্রচলিত রমজানের শেষ তিন দিনের ইতিকাফ আদায় করলে তা সুন্নাত হবে না বরং নফল ইতিকাফ হবে। তাই আসুন, পবিত্র রমজানের শেষ দশক অর্থাৎ ১০ দিন ইতিকাফ আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য হাসিলের চেষ্টা করি। আল্লাহ সবাইকে তাওফিক দিন । আমিন।
আরও পড়ুন : শেষ দশকের ইতিকাফ; গুরুত্বপূর্ণ ১০ মাসআলা