বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
প্রাইমারি স্কুলে আলেম ধর্মীয় শিক্ষক বাধ্যতামূলক করতে হবে: মাওলানা ইসলামাবাদী বগুড়ায় ছাত্র আন্দোলনে আহত ও শহীদদের স্মরণে স্মরণসভা শেরপুরে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহিদদের স্মরণে স্মরণসভা শেরপুরে শেখ হাসিনাসহ ৫৯ জনের নামে মামলা কাল বাদ জুমা বায়তুল মোকাররমে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে যা বললেন জামায়াত আমীর হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ল ১৫ দিন রাষ্ট্রদ্রোহী সংগঠন চলতে দেয়া হবে না: মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী ২২৫০০ কোটি নতুন টাকা ছাপিয়ে ৬ ব্যাংককে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক দারুন্নাজাতের প্রাক্তন ছাত্র শিহাবউদ্দীনের আল আজহার থেকে এমফিল ডিগ্রি অর্জন

ভারত নাকি হিন্দুস্তান?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম : হিন্দুস্তান বা হিন্দুস্থান, বর্তমান Indian Subcontinent (ভারতীয় উপমহাদেশ) এর ঐতিহাসিকভাবে জনপ্রিয় নামগুলির একটি। এই নামের আক্ষরিক অর্থ “সিন্ধু নদের দেশ”। সিন্ধু নদ বা সিন্ধু দরিয়া (ইংরেজিঃ Indus river) এই অঞ্চলের উত্তর-পশ্চিম কোণে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক নদীর নাম।

হিন্দুস্তান নামটি বেশ প্রাচীন, যা এসেছে আদি ফার্সি শব্দ “হিন্দু” থেকে। ফার্সি ভাষায় সিন্ধু নদকে বলা হতো হিন্দু নদ। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জনপ্রিয় “স্তান” অনুসর্গটি (ফার্সি ভাষায় যার অর্থ “স্থান”)।

ইংরেজি “India” শব্দটিও এসেছে সিন্ধু নদের আদি ফার্সি নাম হিন্দু থেকে। এছাড়াও প্রাচীন গ্রিকরা ভারতীয়দের “ইন্দোই” (Ινδοί; অর্থঃ Indus (সিন্ধু) নদী অববাহিকার অধিবাসী) নামে অভিহিত করতো। আগে হিন্দুস্তান বলতে গোটা উপমহাদেশকেই বোঝাত।

অর্থাৎ ঐতিহাসিকভাবে “হিন্দু” কোন ধর্মের নাম নয় বরং সিন্ধু নদের পাড়ে বসবাসরত মানুষদেরকে বোঝাতো তারা যে ধর্মের অনুসারীই হোক না কেন। অন্যদিকে, বর্তমান হিন্দুধর্মের মূল নাম হচ্ছে সনাতন ধর্ম (সংস্কৃতঃ सनातन धर्म) যা কালের বিবর্তনে এখন হিন্দুধর্ম নামে পরিচিত হয়ে গিয়েছে।

mughal_historical_map-copy

১৮শ শতকের শেষভাগে ইউরোপীয় বণিক ও ঔপনিবেশিক শাসকেরা হিন্দুস্তানের সকল ধর্মের অনুসারীদের একত্রে হিন্দু নামে অভিহিত করে।

তবে ধীরে ধীরে এই শব্দটি যারা আব্রাহামীয় ধর্মসমূহ (ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্ম এবং ইসলাম) অথবা অবৈদিক ধর্মসমূহের (যেমন জৈনধর্ম, বৌদ্ধধর্ম ও শিখধর্ম) অনুসারী নন, বরং সনাতন ধর্ম নামক ধর্মীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এমন সকল বংশোদ্ভুত ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়ে পড়ে।

ইংরেজি ভাষাতে এ অঞ্চলের স্থানীয় ধর্মীয়, দার্শনিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগুলি বোঝাতে “হিন্দুইজম” বা “হিন্দুধর্ম” কথাটি চালু হয় ১৯শ শতকে।

১৯৪৭ এ স্বাধীনতার পর সনাতন ধর্মের অনুসারী অধ্যুষিত নতুন দেশটির সংবিধানে ও লোকমুখে “ভারত” নামটিই প্রচলিত হয় যা মূলত এই অঞ্চলের দীর্ঘ ইসলামী শাসনের ইতিহাসকে মুছে দিয়ে সনাতন ধর্মের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার একটি প্রচেষ্টা।

অন্যদিকে “ভারত” নামটির উৎপত্তি চন্দ্রবংশীয় পৌরাণিক রাজা “ভরত” এর নামানুসারে। সংস্কৃত ভাষায় রচিত প্রাচীন ভারতের দুটি প্রধান মহাকাব্য হচ্ছে মহাভারত এবং রামায়ণ। “মহাভারত” এর অর্থ হলো ভরত বংশের মহান উপাখ্যান। কথিত আছে এই বর্ষ বা অঞ্চলটি রাজা ভরতকে দান করা হয়েছিল বলে এর নাম “ভারতবর্ষ”।

সারা বিশ্বের মুসলিমগণ অতীতে এই উপমহাদেশকে (এবং এখনও) “আল-হিন্দ/হিন্দুস্তান” (আরবীঃ الهند — Al-Hind, ফার্সিঃ هندوستان — Hindustan) বলেই ডাকতেন।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, রাসূল ﷺ এর সময়ও এই উপমহাদেশকে বুঝানোর জন্য আল-হিন্দ (الهند) নামটি ব্যবহৃত হয়েছে যা সহীহ হাদিসের বর্ণনা থেকে জানা যায়। এই ওয়েবসাইট এর মূল ইংরেজি আর্টিকেলগুলোতে India বলতে বুঝানো হয়েছে গোটা উপমহাদেশ, যা মূলত হিন্দুস্তান।

ঐতিহাসিকভাবে ইসলামের হারানো ইতিহাস এর ক্ষেত্রেও তাই আমরা “হিন্দুস্তান” নামটিই ব্যবহার করব।উৎস : লস্ট ইসলামিক হিস্টোরি।

আরও পড়ুন : ভারতে হিন্দু পণ্ডিতের মুখে মহানবির প্রশংসায় কবিতা


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ