ইলিয়াছ মাহমুদ: পদ্মার ডান তীর সংরক্ষন ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে নদী শাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং আগামী বর্ষার আগেই কাজ শুরুর দাবীতে জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন ও প্রতীকী অনশন করেছে শরীয়তপুরের নড়িয়া ও জাজিরার উপজেলার পদ্মার বাঙন কবলিত এলাকাবাসী।
সোমবার (০৫ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে ঢাকাস্থ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে মানববন্ধন ও প্রতীকী অনশনে নড়িয়া-জাজিরার প্রায় সহস্রাধিক মানুষ অংশ নেয়। পরে দ্রততম সময়ের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দাবীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
মানবন্ধন ও প্রতীকী অনশনে বক্তব্য রাখেন, শরীয়তপুর-২ আসনের সাংসদ কর্ণেল (অবঃ) শওকত আলী, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামিম, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটর এ্যাড. সুলতান মাহমুদ সীমন, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মিজ মাজেদা শওকত আলী, ৭১ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ডা. খালেদ শওকত আলী, মর্ডান হারবাল গ্রুপের চেয়ারম্যান ডা. আলমগীর মতি, শরীয়তপুর জেলা বার কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি এ্যাড. আবুল কালাম আজাদ, নড়িয়া পৌর মেয়র শহীদুল ইসলাম বাবু রাড়ি, মোক্তারেরচর ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম চৌকিদার প্রমূখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নড়িয়া-জাজিরা উপজেলা বহু বছর ধরে পদ্মা নদীর ভাঙনের ফলে দুটি উপজেলা শরীয়তপুর জেলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। শত শত পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। আমরা ভাঙনকবলিত এলাকাবাসী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে বহু আন্দোলন সংগ্রামের ফলে গত ০২ জানুয়ারী একনেক সভায় বেরীবাধ প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রকল্পটির দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাধ নির্মান করা না হলে নড়িয়া পৌর বাজার সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকার কথা উল্লেখ্য করে বক্তারা করছি সরকারের কাছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ বাধ নির্মাণ করার দাবী জানায়।
প্রসঙ্গত গত দুই বছরে পদ্মার অব্যাহত ভাঙনে শরীয়তপুরের নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার প্রায় ৭ হাজার পরিবার গৃহহীন হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী বর্তমানে ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে ৮ হাজার বসত বাড়ি, ১৮৫ কিলোমিটার সড়ক, ১ কিলোমিটার সুরেশ্বর রক্ষা বাধ, ২২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৫৫ মসজিদ মাদরাসা সহ প্রায় ৩ হাজার ৪২৫ কোটি টাকার সম্পদ।
এ ক্ষতি এড়াতে জাজিরা-নড়িয়া পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প গত ২ জানুয়ারি অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
১ হাজার ৯৭ কোটি টাকার এ প্রকল্পের আওতায় ৯ কিলোমিটার এলাকায় বাঁধ ও চর ড্রেজিং করা হবে। কিন্তু শুষ্ক মৌসুমে এ প্রকল্পের কোন দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ায় আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে দুই উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। শুস্ক মৌসুমে বাধ নির্মান করা না গেলে আগামী বর্ষায় নড়িয়া উপজেলা সদর বিলিন হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে বেরীবাধ নির্মানের দাবী জানিয়েছে স্থানীয়রা।
এসএস/