আওয়ার ইসলাম
অমর একুশে বইমেলায় বইয়ের স্টলের নাম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন টাঙ্গাইলের তিনজন কিশোর শিক্ষার্থী, কারণ পর্ন তারকা হিসেবে পরিচিত দুজনের নামে তারা স্টলের নামকরণ করেছিলেন।
তাদের স্টলের নাম দেয়া হয়েছিল আমেরিকান পর্ন তারকা জনি সিন্স আর মিয়া খলিফার নামে।
এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হওয়ার পর মঙ্গলবার ঐ তিনজনকে আটক করে মেলা কমিটির সদস্যরা। এই তিনজনই এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী।
আটক করার পর তাদেরকে প্রথমে পুলিশে দেয়া হয়, তবে পরে অবশ্য অভিভাবকদের মুচলেকায় ছেড়ে দেয়া হয় সবাইকেই।
বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের জেলার কালিহাতি উপজেলায় একুশের বইমেলায় এই ঘটনা ঘটেছে।
কালিহাতির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বইমেলা উদযাপন কমিটির প্রধান মোসাম্মৎ শাহীনা আক্তার বিবিসি বাংলাকে বলেন, ''অভিযোগটি পাওয়ার পরই স্টল বরাদ্দ পাওয়া তিনজনকে আটক করা হয় আর স্টলটি বন্ধ করে দেয়া হয়। তারা স্টল বরাদ্দের সময় একটি নাম দিয়েছিলেন, কিন্তু পরে ব্যবহার করেন অন্য নাম।''
তিনি বলেন, ''তবে তারা এসএসসি পরীক্ষার্থী হওয়ায় পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে অভিভাবকদের জিম্মায় দেয়া হয়েছে। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।''
গত ১৯শে ফেব্রুয়ারি থেকে তিনদিনের এই মেলাটি শুরু হলেও ২০শে ফেব্রুয়ারি স্টলের নামের বিষয়টি ধরা পড়ে।
মেলা কমিটির সদস্যরা বলছেন, এসব নাম তাদের কাছে পরিচিত না হওয়ায় বিষয়টি প্রথমে তারা বুঝতে পারেননি। তবে এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ার পর তারা ব্যবস্থা নিয়েছেন।
টাঙ্গাইলের সাংবাদিক শাহরিয়ার সিফাত বিবিসি বাংলাকে জানান, শিক্ষার্থী তিনজন বইমেলায় একটি স্টল দিয়েছিলেন যেখানে নানা ধরণের গল্প-উপন্যাস বিক্রি করার কথা ছিল।
টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলায় সোমবার থেকে শুরু হয় তিনদিনের একুশে বইমেলা
কিন্তু স্টলটির নামকরণ পর্ন তারকা হিসেবে পরিচিত দুজনের নামে করার পরই বিতর্ক শুরু হয়। স্টলের ছবি সামাজিক মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই মেলা কমিটি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে স্টলটি বন্ধ করে দেয় আর তাদের আটক করে।
তিনি বলেন, ঐ কিশোররা হয়তো অতি উৎসাহী হয়ে স্টলের এ রকম নামকরণ করেছিল। হয়তো ভেবেছিল, এ রকম নাম দিলে অনেক লোকজন আসবে এবং পরিচিতি বেশি হবে।
মেলা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব আনসার আলী বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''১৯ তারিখ থেকে মেলাটি শুরু হলেও স্টলে ব্যবহার করা এসব নাম তাদের কাছে পরিচিত না হওয়ায় প্রথমে নামকরণের বিষয়টি তারা ধরতে পারেননি। কিন্তু যারা বুঝতে পেরেছিলেন, তারা এ নিয়ে আপত্তি জানানোর পরই ব্যবস্থা নেয়া হয়।''
অভিযুক্ত তিনজন কিংবা তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে অবশ্য কথা বলা সম্ভব হয়নি।
তবে মি. আলী বলছেন, ''ঐ তিনজন জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে যে ইন্টারনেট, ফেসবুক দেখে এ রকম নাম দেয়ার কথা তাদের মাথায় আসে। তারা ভেবেছিল যে এ রকম নাম দিলে অনেক মানুষ তাদের স্টলে আসবে। কিন্তু এখন তারা তাদের ভুল বুঝতে পেরেছে বলে আমাদেরকে জানিয়েছে।''
কিশোরদের আটক করে প্রথমে পুলিশের কাছে দেয়া হলেও পরে চলমান এসএসসি পরীক্ষার কথা বিবেচনা করে অভিভাবকদের কাছে দেয়া হয়।
কালিহাতি থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশাররফ হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, ''ছেলেগুলোকে প্রথমে পুলিশের কাছে দেয়া হলেও পরে অপ্রাপ্তবয়স্ক বিবেচনায় মেলা কমিটির সদস্যরাই মুচলেকা নিয়ে তাদেরকে অভিভাবকদের কাছে দিয়েছে।''
তাদের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর আবার তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সূত্র: বিবিসি