আওয়ার ইসলাম: আইসল্যান্ডের খৎনা নিষিদ্ধের জন্য একটি বিল আনার পর এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। দেশটির পার্লামেন্টে এ সংক্রান্ত এক বিল উত্থাপন করা হলে জনগণের মধ্যে বিভক্তি দেখা দেয়।
চিকিৎসার প্রয়োজন ছাড়া দেশটিতে খৎনা নিষিদ্ধ করতে চায় আইসল্যান্ডের সরকার। খবর বিবিসি বাংলার
উত্থাপিত বিলে শাস্তির বিধান রেখে বলা হয়, কোন শিশুর খৎনা করালে ছয় বছর পর্যন্ত কারাদন্ড হতে পারে। বিলে বলা হয়েছে, এর মাধ্যমে শিশুদের অধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে।
একুশে বইমেলা প্রকাশিত সব বই দেখতে ও কিনতে ক্লিক করুন
এ বিল উত্থাপনের পর মুসলিম এবং ইহুদি সংগঠনগুলো যৌথভাবে প্রতিবাদে নেমেছে। তাদের বক্তব্য, এটি তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণের সামিল।
মুসলিম ও ইহুদিবাদী সংগঠনগুলো এ বিল উত্থাপনের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানায়। দেশটিতে প্রায় দেড় হাজার মুসলিম এবং আড়াইশো ইহুদি রয়েছে।
তাদের বক্তব্য, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে শিশুর খৎনা জরুরি। এতে শিশুর স্বাস্থ্যগত উপকার রয়েছে। কিন্তু সরকার সেদিকে লক্ষ না করে তা বন্ধের উদ্যোগ নিচ্ছে।
এর আগে আইসল্যান্ডের প্রগ্রেসিভ পার্টির এমপি সিলজা ডগ গানারসডটির এই বিলটি এনে বলেছেন, এটি কারও ধর্মীয় বিশ্বাসের স্বাধীনতার বিষয় নয়, বরং এটি শিশুদের অধিকারের বিষয়।
নরডিক ইহুদি কমিউনিটিজ এক বিবৃতি দিয়ে এই বিলটির নিন্দা করেছে। তারা বলেছে, ইহুদি ধর্মবিশ্বাসের সবচেয়ে কেন্দ্রীয় একটি রীতিকে এতে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।
এক খোলা চিঠিতে সংগঠনটি বলেছে, আপনারা ইহুদি ধর্মকে এমনভাবে আক্রমণ করতে যাচ্ছেন যা সারা বিশ্বের ইহুদিদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
আইসল্যান্ডের ইসলামিক কালচারাল সেন্টারের ইমাম আহমাদ সিদ্দিকও এর সমালোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, এটি আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের অংশ। এটাতো আমাদের ধর্মে হাত দেয়ার সামিল। আমি মনে করি এটি ধর্মীয় স্বাধীনতার লঙ্ঘন।
খৎনা কেন করা হয়?
মুসলিমরা তাদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী খৎনা করিয়ে থাকে। এটি সুন্নত। এতে যৌন জীবনে বেশ উপকারও থাকে এবং নানারকম রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
এছাড়া ইহুদি ও খ্রিস্টানরাও খৎনা করে থাকে। আমেরিকায় সাধারণত জন্মের পরপরই খৎনা করানো হয়। ইহুদিরা তাদের ছেলে বাচ্চাকে সাধারণত ৮ দিন বয়সে খৎনা করায়। মুসলিমরা সাধরণত ৫-৭ বছর বয়সে খৎনা করায়।
খৎনার উপকারিতা
খৎনা করালে পুরাষাঙ্গের ক্যান্সার প্রতিরোধ করা যায়। পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার মুসলমান ও খ্রিস্টানদের মধ্যে নাই বললেই চলে। তার প্রধান কারণ খাৎনা।
পুরুষাঙ্গের মাথার বাড়তি চামড়ার নিচে সাদা এক ধরনের পদার্থ (স্মেগমা) জমে এবং এই স্মেগমাই পুরুষাঙ্গের ক্যান্সার এর জন্য দায়ী।
যৌন রোগের বিস্তার প্রতিরোধ করা যায়। মুসলমানি করা পুরুষের স্ত্রীর দ্বারা যৌন রোগে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে সুবিধা হয়। পুরুষাঙ্গের অগ্রত্বকের নিচে সাদা পদার্থ জমে দুর্গন্ধ হয়, স্ত্রী সহবাসের সময় স্ত্রীর যোনিরস প্রবেশ করে পরবর্তীতে যন্ত্রণার সৃষ্টি করে। খৎনা করা পুরুষের এসব অসুবিধা নেই।