আওয়ার ইসলাম : রাজধানীর হাইকোর্ট এলাকায় পুলিশের প্রিজন ভ্যানে হামলা ও ছাত্রদলের দুই কর্মীকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ৬৯ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। দুই মামলায় আটক হওয়া ৬৯ জনসহ বিএনপির শীর্ষ নেতাকর্মীদের অনেককেই আসামি করা হবে। পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘মামলার প্রস্তুতি চলছে। হামলার পর ৬৯ জনকে আটক করা হয়েছে। হামলায় অংশ নেওয়া অন্য আসামিদেরও গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।’
মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিকাল পৌনে চারটার দিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার শুনানি শেষে আদালত থেকে গুলশানে ফিরছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এসময় হাইকোর্ট এলাকায় আগে থেকে জড়ো হওয়া বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা পুলিশের একটি প্রিজন ভ্যানে হামলা চালান। তারা প্রিজন ভ্যান ভাঙচুর করে ভেতরে থাকা ছাত্রদলের দুই কর্মীকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। এঘটনায় শাহবাগ থানার এএসআই হান্নান এবং একজন কনস্টেবল আহত হন। এসময় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশের একটি রাইফেলের বাটও ভেঙে ফেলে।
পুলিশ সূত্র জানায়, হামলার পর শাহাবাগ ও রমনা থানা পুলিশসহ গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা হাইকোর্ট এবং আশেপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে ২২ জনকে আটক করেন। পরে সন্ধ্যায় আরও ৪৭ জনসহ মোট ৬৯ জনকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিদের যাচাই-বাছাই করে বুধবার (৩১ জানুয়ারি) আদালতে পাঠানো হবে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, প্রিজন ভ্যানে হামলার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। প্রিজন ভ্যানে হামলা, পুলিশের কর্তব্য ও কাজে বাধা সৃষ্টি ও অস্ত্র ভাঙচুরের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হবে। অন্য মামলাটিও হবে পুলিশের কর্তব্য-কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে। আটক হওয়া ব্যক্তিদের দুটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে। এছাড়া, মামলায় হুকুমের আসামি হিসেবে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের অনেকের নাম থাকতে পারে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার হাজিরাকে কেন্দ্র করে পূর্বের মতোই হাইকোর্ট এলাকায় জড়ো হয়েছিল দলটির নেতাকর্মীরা। এ সময় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা ওবায়দুল হক নাসির (৪০), সোহাগ মজুমদার (৩৮) ও মিলন (৩৮) নামের তিনজনকে আটক করে পুলিশ। তাদেরকে প্রিজন ভ্যানে রাখা হয়।
এরপর হাজিরা শেষে বিএনপি চেয়ারপারসন বাসায় ফেরত যাওয়ার পথে একদল বিএনপি কর্মী ওই প্রিজন ভ্যানে ভাঙচুর চালিয়ে নেতাদের ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
যদিও পুলিশ পরে জানায় সেখানে তারা দু’জনকে আটক করেছিল।
উল্লেখ্য, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণার জন্য আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত। এ নিয়ে ইতোমধ্যে উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে রাজনৈতিক অঙ্গন।
এদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় মঙ্গলবার আদালতে হাজিরা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সে মামলাটিরও বিচারিক কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে।