হাওলাদার জহিরুল ইসলাম: চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জিরি মাদরাসার দুই দিনব্যাপী ১১১তম বার্ষিক ইসলামী মহাসম্মেলন ৫ জানুয়ারি বাদ আসর মুনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়।
শেষদিনের শেষ অধিবেশনে মুনাজাত ও বয়ান পেশ করেন ঢাকার মারকাযুত তাকওয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক, দেশের আলোচিত ওয়ায়েজ মুফতী হাবিবুর রহমান মিছবাহ [কুয়াকাটা]।
মুফতী মিছবাহ সুরা কাওসারের আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, কেয়ামতের দিন কোনো বিদআতি হাউজে কাওসারের পানি পান করতে পারবে না। হাউজে কাওসারের পানি শুধুমাত্র আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আকিদাপন্থি আমলদারদের জন্য।
যারা কথায় কথায় ওলামায়ে দেওবন্দকে কাফের বলে, তাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বলেন, তারা যদি কাফের হবার ইল্লত/কারণ প্রমাণ করতে পারে, তাহলে আমরা নতুনভাবে কালিমা পড়ে মুসলমান হয়ে যাবো। আর যদি প্রমাণ করতে না পারে, তাহলে কাফের ফতোয়া প্রদানকারীরা দশবার কান ধরে উঠবস করবে এবং আমরা সেটা ভিডিও করে ফেসবুকে ছেড়ে দিবো।
তিনি লা-মাযহাবী নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল হতে আগত ওলামা-মাশায়েখ ও তৌহিদী জনতার মহামিলন ঘটেছিলো জিরি মাদরাসায়। জিরি মাদরাসার ইতিহাসে শেষদিন শেষ অধিবেশনে এতো লোক সমাগমের ইতিহাস এটাই প্রথম।
বিশাল ময়দান, মসজিদ, মাদরাসা ও মাদরাসার আশপাশ ছিলো লোকে-লোকারণ্য। মুনাজাতের পূর্বে জিরি মাদরাসার মুহতামিম হুজুরের নির্দেশে নির্মাধীন দারুল হাদীসের জন্য কিছু কালেকশন করেন। এসময় প্রথমেই মুফতী মিছবাহ সাহেব নিজে নগদ দশ হাজার টাকা দান করেন।
পরবর্তীতে খুচরা নগদ কালেকশনেও আরো নগদ এক হাজার টাকা দান করেন। এই দান সবার মাঝে প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়।
জানা যায় মুফতী মিছবাহ ওয়াজ থেকে প্রাপ্ত হাদিয়া এভাবেই বিভিন্ন দীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দান করেন। তার নিজের মাদরাসায়ও কোনো কালেকশন করেন না। ওয়াজ মাহফিল থেকে প্রাপ্ত টাকা দিয়ে মাদরাসা চালান। তার নিজস্ব কোনো গাড়ি বা বাড়িও নেই। নেই কোনো ব্যাংক একাউন্টও।
জিরি মাদরাসার এক সিনিয়র শিক্ষক বলেন, মিছবাহ সাহেবের বয়ানে আলাদা কিছু জিনিস থাকে, যা অন্য ওয়ায়েজ থেকে পাওয়া যায় না। তাই তার বয়ানের প্রতি মানুষের এতো আগ্রহ।
৪জানুয়ারি শুরু হয়ে ৫ জানুয়ারি বাদ আসর শেষ হয় এই সম্মেলন। আখেরি বয়ান ও মুনাজাত করেন মুফতী হাবিবুর রহমান মিছবাহ [কুয়াকাটা]।
সভাপতিত্ব করেন, অত্র জামিআর মহাপরিচালক, রাহনুমায়ে শরিয়ত ও তরিকত, মুসলেহে উম্মাহ, পীরে কামেল আল্লামা শাহ মুহাম্মাদ তৈয়্যব।
অন্যান্যদের মধ্যে বয়ান করেন, আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, মহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসান, আল্লামা আব্দুল হালিম বোখারী, আল্লামা সুলতান যওক নদভী, ড. আফম খালিদ হোসাইন, মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ূবী, মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দীক কুয়াকাটা, মাওলানা নজরুল ইসলাম, মাওলানা শাহাদাত হোসাইন আরমানী প্রমুখ।
আরআর