আওয়ার ইসলাম: ইমামদের বৃহত্তম অরাজনৈতিক সংগঠন জাতীয় ইমাম সমাজ বাংলাদেশ আজ শুক্রবার বাদ জুমা লালবাগ গৌর শহীদ মাজার চত্তরে উদ্যোগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষনার প্রতিবাদে আমেরিকান দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচী পালন করেছে।
লালবাগ গৌর শহীদ মাজার চত্তরে দূতাবাস ঘেরাও পূর্ব বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মাওলানা ক্বারী আবুল হোসাইন।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ ট্রাম্পের প্রতি ঘৃণা, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, ইসলামের তৃতীয় সম্মনিত স্থান পবিত্র নগরী জেরুসালেমকে আধিপত্যবাদী, সাম্রাজ্যবাবাদী শক্তি ও যুদ্ধবাজ আমেরিকার উন্মাদ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বসন্ত্রাসী ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করে পৃথিবী সকল মুসলমানদের অন্তরে আগুন জাালিয়ে দিয়েছে এবং গোটা বিশ্বকে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ও যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে।
বক্তারা বলেন, অনতিবিলম্বে ট্রাম্পের এ ঘোষনা প্রত্যাহার করে উত্তপ্ত মুসলিম বিশ্বকে শান্ত করতে হবে। ওআইসির ঘোষনা অনুযায়ী জেরুসালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানীর স্বীকৃতি দিতে হবে। তা না হলে জাতীয় ইমাম সমাজ বিশ্ব মুসলিম ধর্মীয় নেতা ও ইমাম-খতিবদের নিয়ে বৃহত্তর ঐক্যের মাধ্যমে আমেরিকার সাথে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন ও কূটনৈতিকভাবে বয়কট করতে কঠিন কর্মসূচী দিতে বাধ্য হবে।
সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি তার ঘোষনা প্রত্যাহার না করে তাহলে ভবিষ্যত পরিস্থিতির জন্য তিনি ও তার প্রশাসন দায়ী থাকবেন।
সমাবেশ উপস্থিত নেতৃবৃন্দ জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের মসজিদগুলো হতে বিক্ষোভ মিছিলসহ সকল প্রকার প্রতিবাদ অব্যহত রাখার উদাত্ত আহবান জানান।
মাওলানা ক্বারী আবুল হোসাইন এর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় ইমাম সমাজ বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা বেলায়েত হোসাইন আল- ফিরোজী, মহাসচিব মুফতী মিনহাজুদ্দিন, লালবাগ মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতী ফয়জুল্লাহ, মুফতী তৈয়্যব হোসাইন,২৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিক, মাওলানা নুর উদ্দিন লাহুরী, মুফতী সাইফুল ইসলাম, মাওলানা জাফর আহমদ, মাওলানা আনোয়ারুল হক, মুফতী তাসলীম আহমদ, মুফতী রহমতুল্লাহ, মুফতী শামসুল হক, মাওলানা হামিদুল হক, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা যোবায়ের আহমদ কাসেমী, মাওলানা খালেদ মোশারফ, মাওলানা শহীদুল আনোয়ার, মাওলানা এমদাদুল হক সাঈফী, হাজারীবাগ থানা সভাপতি মাওলানা মিজানুর রহমান, চকবাজার থানা সভাপতি মুফতী বশিরুল হাসান, কেরানীগঞ্জ থানা সভাপতি মাওলানা আব্দুল গণি, বংশাল থানা সভাপতি মাওলানা মুসা বিন ইজহার, সেক্রেটারী মাওলানা মীর হেদায়েতুল্লাহ গাজী, লালবাগ থানা সভাপতি মাওলানা আহাম্মদ হোসেন, ধানমন্ডি থানা সভাপতি মাওলানা ইলিয়াছ হামিদী, কামরাঙ্গীর চর থানা সভাপতি মাওলানা ইলিয়াছ মাদারীপুরী, প্রচার সম্পাদক মুফতী শহিদুল আনোয়ারসহ পুরান ঢাকার ইমাম-খতীব ও ওলামায়ে কেরাম।
সমাবেশ শেষে জাতীয় ইমাম সমাজ নেতৃবৃন্দ বিশাল মিছিল নিয়ে আমেরিকা দূতাবাস অভিমুখেস যাত্রা শুরু করলে পলাশী মোড়ে পুলিশ বেরিকেড দিয়ে বাধা প্রদান করে। এ সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। নেতাকর্মীরা আমেরিকা ও ইসরাইলের পতাকায় আগুন দেয় ও ট্রাম্প ও ইসরাইল বিরোধী স্লোগান দিতে থাকে।
পরে পরিস্থিতি শান্ত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমাবেশ সমাপ্ত করে ইমাম সমাজের তিনজন প্রতিনিধিকে আমেরিকার দূতাবাসে গিয়ে প্রতিবাদলিপি জমা দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়।
এ সময় জাতীয় ইমাম সমাজ বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা ক্বারী আবুল হোসাইন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা বেলায়েত হোসাইন আল-ফিরোজী ও মহাসচিব মুফতী মিনহাজুদ্দিন বারিধারায় আমেরিকান দূতাবাসে গিয়ে প্রতিবাদ লিপি জমা দেন।
এসএস/