রোকন রাইয়ান: নির্বাচনী শপথ বাক্য থেকে নবী মুহাম্মদ সা. এর নাম বাদ দেয়ার প্রেক্ষিতে কয়েক সপ্তাহ ধরে পাকিস্তানে চলছে বিক্ষোভ। সে বিক্ষোভ ইসলামাবাদ থেকে এখন ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশে।
সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, বিদ্রোহ দমনে পাকিস্তান সরকার সেনাবাহিনী তলব করেছে।
এর আগে দেশটিতে বিক্ষোভের খবর যাতে প্রচার না হয় সে কারণে চব্বিশ ঘণ্টার জন্য বেসরকারি সব টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় সব ধরনের সোশ্যাল মিডিয়াও।
পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করায় শনিবার বিকালে দেশটিতে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে সরকার।
পাক আইনমন্ত্রী জাহিদ হামিদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ ব্লাসফেমি বা ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে এ বিক্ষোভ চলছে। তার অপসারণের দাবিতে তখন থেকেই তারা ফইজাবাদ হাইওয়ের মোড়ে অবস্থান নেয় দেশটির সাধারণ নাগরিক।
সেখান থেকে তাদের সরানোর অভিযান শুরু হলে তাদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়লে তারা ইটপাটকেল ছুড়ে জবাব দেয়। এতে আহত হয় অন্তত ২০০ জন।
নির্বাচনী শপথের একটি অংশে নবী মুহাম্মদ সা. এর উল্লেখ বাদ পড়ার পর আইনমন্ত্রী জাহিদ হামিদ অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ শুরু করে সাধারণ মানুষ। তবে এ ঘটনা একজন ক্লার্কের ভুলে হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাহিদ হামিদ।
এদিকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ দমনে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ বিক্ষোভকারী ১৫০ জনকে গ্রেফতার করেছে। এছাড়া তাদের ছোড়া গুলি ও লাঠিচার্জে আহত হয়েছে অসংখ্য বিক্ষোভকারী।
বিদেশি পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তেহরিকে পাকিস্তানের মুখপাত্র, এজাজ আশরাফী বলেন, আমাদের হাজার হাজার কর্মী রাস্তায় রয়েছে। আইনমন্ত্রীর বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরবো না। প্রয়োজনে যুদ্ধ করবো।
রাওয়ালপিন্ডিতে বিক্ষোভের সময় পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ লেগে যায়। এতে পুলিশ গুলি ছুড়ে। বিক্ষোভকারী দুই পুলিশসহ পুলিশের দুটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়।
ইসলামবাদ, রাওয়ালপিন্ডির হাসপাতালগুলোতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (পিআইএমএস) হাসপাতালের প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ১৭৫ জন আহতকে হাসপাতালে আনা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৭ জন পুলিশ এবং ৪৪ জন এফসি কর্মী এবং ৪৯ জন সাধারণ নাগরিক।
সূত্র: বিবিসি ও ডন