আওয়ার ইসলাম : গুলিস্তান মদিনাতুল উলুম মাদরাসার শিক্ষার্থী আবদুর রহমান জিদানের খুনের রহস্য উদঘাটন করতে পেরেছে বলে দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
সিনিয়র সহপাঠী হাতেই খুন হয়েছে জিদান। নিজের ফুটফরমাশ না শোনা এবং অনৈতিক সম্পর্কে রাজি না হওয়ায় ওই শিক্ষার্থী জিদানকে খুন করেছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
গতকাল এক সাংবাদিক সম্মেলনে র্যাব ৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমরানুল হাসান ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, আসামি হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে এবং ঘটনার কারণ ও বিবরণও দিয়েছে।
গত সোমবার ১২ বছর বয়সী জিদানের মরদেহ পাওয়া যায় ওই মাদরাসার সেপটিক ট্যাংকে। এ সময় আবু বকর নামে একজন শিক্ষার্থী পলাতক ছিলো। জিদানের বাবা মো. হাফেজ উদ্দিন ওই শিক্ষার্থীকে আসামি করে পল্টন থানায় মামলা করেন।
ঘটনার বিবরণে র্যাব বলে, বয়সে বড় ওই শিক্ষার্থী ছাত্রদের দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ করাতো। কিন্তু জিদান তার কথা শুনতো না। এ নিয়ে কয়েকবার জিদান মেরেছেও সে। গত ১৬ নভেম্বর উভয়ের মধ্যে ঝগড়া হয়। ওই দিন ওই আসামি জিদানকে চড় দেয়। এ ব্যাপারে জিদান মাদরাসার শিক্ষক ইয়াছিনের কাছে নালিশ করে। পরে ওই শিক্ষক আসামিকে সতর্ক করে দেন।
র্যাব জানিয়েছে, জিদানকে ‘অনৈতিক প্রস্তাব’ দিয়েছিল ওই শিক্ষার্থী। জিদান রাজি হয়নি। ওই শিক্ষার্থীর সন্দেহ হয়েছিল, জিদান অন্য কারো সঙ্গে ‘অনৈতিক’ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল। এরই কারণে ফল কাটার ছুরি দিয়ে জিদানকে হত্যা করে।
আসামি জানায়, জিদান অন্য কারো সঙ্গে সম্পর্কে জড়াচ্ছে এ কারণে ‘প্রতিহিংসার বশবর্তী’ হয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটায়। তবে মাদরাসার শিক্ষক ইয়াছিনের কাছে নালিশ দেয়ার পরই জিদানকে হত্যার পরিকল্পনা করে ওই আসামি।
গত রোববার রাতে নিজের ফল কাটার ছুরিটিকে ধারালো করে ওই আসামি। রাত ১০টার দিকে খাওয়া শেষ করে সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। আর রাত দেড়টার দিকে আসামি শিশু জিদানের মুখ চেপে ধরে গলায় ছুরি দিয়ে পোঁচ দেয়। জিদানের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর সে কোলে করে জিদানের মৃতদেহ সেপটিক ট্যাংকের কাছে নিয়ে যায় এবং ভেতরে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়।
ওই সময় মাদরাসার ওই কক্ষটিতে ৩০ থেকে ৩৫ জন শিক্ষার্থী শিশু ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল। জিদানের গোঙানিতে একাধিক শিশু জেগে উঠলেও আসামির ভয়ে কেউ কোনো কথা বলেনি।