মাহমুদুল হাসান
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেনু গ্রুপের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পৌরসদরের বরাটিয়া চৌরাস্তা মোড় এলাকায় এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
পরে পৌরবাজারের বিভিন্ন মোড়ে দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় পাকুন্দিয়া পৌরসদর বাজারের বরাটিয়া চৌরাস্তা মোড়, চরফরাদী রোড মোড় এবং সিনেমা হল মোড় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সন্ধ্যার পরও থেমে থেমে এই সংঘর্ষ চলছিল।
সংঘর্ষে পাকুন্দিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ সামসুদ্দীন ও তিন পুলিশ কনস্টেবলসহ অন্তত ২০জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত অন্যদের মধ্যে তিন পুলিশ কনস্টেবল রতন হোসেন (২০), কবির হোসেন (৩০) ও করিম হোসেন এবং উপজেলা চেয়ারম্যান গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে মেহেদি হাসান (৩০), হৃদয় (২০), রিয়াদ উদ্দিন (৩৫) ও মোবারক হোসেন (২৪) কে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাকুন্দিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রেনুর সমর্থকরা বরাটিয়া চৌরাস্তা মোড় দিয়ে লগি লাঠিসোঠা সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পৌরসদর বাজারে প্রবেশের চেষ্টা করেন।
এ সময় পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে উপজেলা চেয়ারম্যান সমর্থকরা সামনে এগিয়ে গেলে প্রতিপক্ষ স্থানীয় এমপির সমর্থক যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ধাওয়া দেয়। এতে গোটা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
পাকুন্দিয়া পৌরসদর ঈদগাহ মাঠে সোমবার বিকালে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্মআহ্বায়ক মো. রফিকুল ইসলাম রেনু সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী হিসেবে শোডাউন ও সমাবেশের ঘোষণা দেন।
ঘোষিত এই সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে তিনি নিজ উপজেলা পাকুন্দিয়া ছাড়াও সংসদীয় আসনের অপর উপজেলা কটিয়াদীতে ব্যাপক প্রচারণা চালান।
কিন্তু শনিবার বিকালে উপজেলা ও পৌর যুবলীগ এবং উপজেলা ছাত্রলীগের আয়োজনে একই সময়ে ও জায়গায় জরুরী সভার ডাক দিয়ে মাইকে প্রচার করা হলে উভয় শিবিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এ নিয়ে রোববার সন্ধ্যার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বর এলাকায় স্থানীয় এমপি অ্যাডভোকেট মো. সোহরাব উদ্দিন সমর্থকদের সঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মুখোমুখি এই অবস্থানের কারণে রোববার রাত ১০টা থেকে পৌর এলাকায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।