আওয়ার ইসলাম: জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর সাথে সাক্ষাত করেছেন বৃটেন জমিয়ত নেতৃবৃন্দ।
আজ (২৬ অক্টোবর) সকাল ৭টায় লন্ডন জমিয়ত প্রতিনিধি দল পল্টনে অবস্থিত জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গমন করেন। এসময় প্রতিনিধি দলকে আন্তরিক অভ্যর্থনা জানান জমিয়তের প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদনী।
এরপর প্রতিনিধি দলের নেতৃবৃন্দ জমিয়ত মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর সাথে সাক্ষাত করেন।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন বৃটেন প্রেস্টেন সিটি জমিয়তের সেক্রেটারী আলহাজ্ব হারুন মিয়া, লন্ডন জমিয়ত নেতা মাওলানা আহমদ মাদানী ও প্রেস্টেন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সোসাইটির সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব ইয়াকুব বক্স।
সালাম ও কুশল বিনিময় শেষে প্রতিনিধি দলের নেতা আলহাজ্ব হারুন মিয়া বৃটেনে জমিয়তের তৎপরতা ও বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে দলীয় মহাসচিবকে অবহিত করে বলেন, বৃটেনে জমিয়তের সাংগঠনিক কার্যক্রম অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ও সুসংগঠিত।
বিশেষ করে লন্ডন, লুটন, বার্মিংহাম, ব্রাডফোর্ড, ওল্ডহাম, লিড, সান্ডারল্যান্ড, প্রেস্টেন সিটিসহ বিভিন্ন স্টেটে জমিয়তের জোরালো তৎপরতা রয়েছে।
অন্যান্য সিটি এবং স্টেটেও জমিয়তের সাংগঠনিক কমিটি গঠনসহ দলীয় কায্যক্রম সম্প্রসারিত করার জন্য নানা উদ্যোগের কথা জানান।
প্রতিনিধি দলের নেতা আরো বলেন, ইসলাম, দেশ ও জাতির স্বার্থে বর্তমানে জমিয়তের ভূমিকা যেভাবে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে প্রবাসী বাংলাদেশীরা গভীরভাবে অনুপ্রাণিতবোধ করে থাকেন।
বিশেষ করে ঈমান-আক্বীদার সুরক্ষা ও ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদ বিরোধী আন্দোলনে জমিয়ত মহাসচিবের গৌরবময় ভূমিকা বৃটেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা গভীরভাবে প্রত্যক্ষ করে থাকেন। এসব ইতিবাচক ভূমিকার ফলে বৃটেন প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে জমিয়তের প্রতি আগ্রহবোধ ও জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
জমিয়ত মহাসচিব প্রতিনিধি দল নেতার বক্তব্য গভীর মনোযোগের সাথে শোনেন এবং বৃটেনে জমিয়তের সৃশৃঙ্খল দলীয় কায্যক্রমের উপর গভীর সন্তোষ প্রকাশ করেন।
এ সময় জমিয়ত মহাসচিব প্রতিনিধি দলের সদস্যদের গভীর ঈমানী তাগিদ ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সদস্য ও কর্মী সংখ্যা বৃদ্ধির প্রচেষ্টাসহ দলীয় কর্মসূচীসমূহ যথাযথভাবে পালনের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, সর্বাবস্থায় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলীয় আনুগত্য ও পারস্পরিক সুসম্পর্ক ও শ্রদ্ধাবোধ বজায় রেখে আল্লাহকে রাজি-খুশী করার মহান উদ্দেশ্য নিয়ে ইখলাসের সাথে কাজ করতে হবে।
জমিয়ত মহাসচিবের সাথে আলোচনা শেষে প্রতিনিধি দলটি জমিয়তের কেন্দ্রীয় অর্থ-সম্পাদক মুফতী মুনির হোসাইন কাসেমীর সাথে মিলিত হয়ে কুশল বিনিময় করেন।
পরিচয় পর্ব ও প্রাথমিক আলাপ শেষে মুফতী মুনির হোসাইন কাসেমী বলেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ দেওবন্দী উসূল ও নীতি-আদর্শ পরিপূর্ণ অনুসরণ করেই পরিচলিত হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য দেওবন্দী কায্যক্রম চার তরিক্বায় পরিচালিত হয়ে থাকে। (১) তালিম-তরবিয়্যাত তথা শিক্ষা ও আচরণে প্রয়োগের মাধ্যমে। (২) দাওয়াত ও ইরশাদ তথা তাবলীগ ও বয়ানের মাধ্যমে দ্বীনের প্রচার-প্রসার। (৩) খানকায়ি নেজামের মাধ্যমে তাসাউফ ও তাযকিয়া তথা অনুসারীদেরকে আত্মশুদ্ধিকরণের মাধ্যমে। এবং (৪) সিয়াসত তথা রাষ্ট্রীয় ও প্রশাসনিক স্তরে দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ গ্রহণ।
মাওলানা মুনির হোসাইন বলেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম উল্লিখিত দেওবন্দী কায্যক্রমের ৪টি নির্দেশনার সমন্বয়ে দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিনিধি দলের সদস্যগণ গভীর মনোযোগের সাথে বক্তব্য শোনেন।
প্রতিনিধি দলের নেতা জমিয়ত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে আলাপ শেষে নিজেদের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ ও উপকৃত হওয়ার কথা জানান।
জমিয়ত মহাসচিব ও অর্থসম্পাদকের সাথে সাক্ষাত ও আলোচনা শেষে প্রতিনিধি দলটি সকাল সাড়ে ৮টায় বিদায় নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ত্যাগ করেন।
‘জমিয়ত সঠিক নিয়মেই চলছে; দলীয় ফোরাম ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত গৃহিত হবে না’