বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

একটা ভালো কাজ করেও কথা ‍শুনতে হচ্ছে, আমার খারাপ লাগছে: লক্ষ্মীপুরের মেয়র

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রোকন রাইয়ান
নির্বাহী সম্পাদক

লক্ষ্মীপুর পৌর সভার মেয়র আহহাজ আবু তাহের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় লক্ষ্মীপুর শহরে দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার নির্দেশে এলাকার সাধারণ মানুষ ও দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান স্বাগত জানান।

তবে আলোচনা সমালোচনার পর একদিনের মাথায় এ ঘোষণা থেকে পিছিয়ে এসেছেন তিনি।

সৌদিতে এরকম আইন থাকলেও বাংলাদেশে এ ঘোষণা অভিনব। সে কারণে ঘোষণার প্রশংসা অনেকে করলেও বিপরীত মত আসতেও সময় লাগেনি।

কিছু মিডিয়া এ নিউজের সঙ্গে সঙ্গে মেয়রের দুর্নীতির ফিরিস্তিও তুলে ধরেছিল। বলেছিল এরকম একজন মানুষ নামাজ উপলক্ষ্যে কেন এমন নির্দেশে যাবেন। তবে মেয়রের সঙ্গে যোগাযোগ করে আওয়ার ইসলাম পেয়েছে ভিন্ন গল্প।

আলহাজ আবু তাহের জানিয়েছেন, এ সিদ্ধান্ত আমার নয়, এখানকার এলাকার ব্যবসায়ীরা ধর্মপ্রাণ, মানুষজনও। তারাই মিলে মিশে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কেবল বাস্তাবায়নের জন্য তারা আমাকে অনুরোধ করেছে।

 

মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) আওয়ার ইসলামের সঙ্গে মেয়র এ নির্দেশের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, ‘গত রমজানে লক্ষ্মীপুর শহরে বিশাল আয়তনের পাঁচতলা মসজিদ করা হয়। মসজিদে হাজার হাজার লোকের নামাজের ব্যবস্থা থাকলেও খুব অল্প মানুষ নামাজে আসছিলো। দেখা যেতো মানুষজন দোকানে বসে অহেতুক আড্ডা দেয়। এক আড্ডায় ১৫-২০ জনও থাকে।’

‘নামাজের প্রতি মানুষের এ অবজ্ঞা ও অবহেলায় দীনদার মুসল্লি, আলেম সমাজ, মসজিদ কমিটি, ব্যবসায়ী সমিতি; বলতে গেলে সর্বস্তরের মানুষের ছিলো অপছন্দনীয়।’

আলহাজ আবু তাহেরের ভাষ্যমতে, ‘তারা রমজানের পর থেকে আমাকে বহুবার অনুরোধ করেছে আমি যেনো এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেই। আমি তাদের বলি, জোর করে কিছুই হয় না। আসেন আমরা সবাই তাদের দাওয়াত দেই, অনুরোধ করি। এরপর আমিসহ সবাই মার্কেটের লোকজনকে নামাজের কথা বুঝাই।’

দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ কেনো দিতে হলো এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা কয়েক মাস দাওয়াত দিলাম, অনুরোধ করলাম কিন্তু খুব বেশি লাভ হলো না। দেখা গেলো, কয়েকজন দোকানদারের জন্য পুরো পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এরপর সবার পরামর্শে আমি এ ঘোষণা দেই।’

দোকান বন্ধের ঘোষণা্য় সর্ব স্তরের মানুষ স্বস্তি ও সন্তোষ প্রকাশ করে। ‘ঘোষণার পর সাধারণ মানুষ দলে দলে আমাকে স্বাগত জানান এবং মসজিদেও মুসল্লিদের উপস্থিতি বাড়ে।’

তবে অমুসলিম ব্যবসায়ীদের জন্য দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ অনুচিত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অমুসলিম ব্যবসায়ীদের আমরা দোকান বন্ধ করতে বলি নি। তাদের বলা হয়েছিলো, নামাজের সময় যেনো দোকানে দোকানে আড্ড বন্ধ করে। যাতে নামাজের পরিবেশ নষ্ট না হয়।’

‘কাল আমার কাছে অনেক হিন্দু ব্যবসায়ী আসে। আমি তাদের বলেছি, তোমাদের দোকান বন্ধ করতে হবে না। কিন্তু আড্ডাটা কমিয়ে দিও।’

তবে নামাজের সময় সব দোকান বন্ধের নির্দেশ দেয়ার একদিন পরই তা থেকে সরে এসেছেন বলে জানান আবু তাহের।

আওয়ার ইসলামের কাছে লক্ষ্মীপুর শহরের সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরে মেয়র আবু তাহের বলেন, ‘গতকাল বিকেলে আমি ঘোষণা দিয়েছি দোকান বন্ধ করতে হবে না। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তাহলে নামাজ পড়তে এসো। আমার কথায় মসজিদে আসার দরকার নেই।’

এ সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসার কারণ হিসেবে বলেন। ‘আমি হিসেব করে দেখেছি, একবার দোকান বন্ধ করে তা খুলতে এবং সাজাতে প্রায় দুই ঘণ্টা চলে যায়। এতে ব্যবসায়ীদের অনেক সময় চলে যায় ৪ বার দোকান বন্ধ করতে ও খুলতে।

‘তাছাড়া এ নির্দেশ নিয়ে অনেক মিডিয়া আমাকে বিব্রত করার চেষ্টা করছে, অনেকে আমাকে ফোন দিয়েছে। আমার খারাপই লেগেছে একটা ভালো কাজ করার পরও আমাকে এতো কথা ‍শুনতে হচ্ছে।’

‘জাগ্রত প্রহর’ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে মুহিব খান

জমিয়তে নেতাদের দূরত্ব মেটাতে সভাপতির কাছে যাচ্ছেন ৬ নেতা

 


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ