বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

হুমকির মুখে ফিলিস্তিনের জাতীয় ঐক্য!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুজাহিদুল ইসলাম
অনুবাদক, আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আমেরিকার পররাষ্ট্র অধিদপ্তর গাজায় সালাফিদের উত্থানে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, ‘গাজায় সালাফিদের উত্থান হামাস ও ফিলিস্তিনের শান্তিচুক্তির পক্ষে হুমকি হতে পারে।

সম্প্রতি মিশরের সহায়তায় হামাস এবং ফাতাহ’র মধ্যকার সমঝোতা চুক্তির বিষয়ে আমেরিকার পররাষ্ট্র অধিদপ্তরে আলোচনা হয়। সেখানে গাজায় সালাফিদের উত্থানকে হামাস এবং অন্যান্যদের জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

আমেরিকান গণমাধ্যমেও এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। আমেরিকান গণমাধ্যমে কোলিং কারালাক নামক একজন লেখকের একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করে, যেখানে তিনি উল্লেখ করেন, সালাফি গ্রুপগুলো ইজরাইলের উপরে হামলা করে বসতে পারে, যার কারণে ফিলিস্তিনিদের মাঝে সম্ভাব্য সমঝোতা নষ্ট হওয়ার আংশকা প্রবল, যা নতুন করে সংঘাত ছড়িয়ে দিতে পারে।

লেখক আরও বলেন, গাজা ভূখণ্ডে অধিকতর চরমপন্থা এবং স্বশস্ত্র পরিবেশের নতুন মাত্রার কারণ হলো, সালাফি আন্দোলনের নতুন মাত্রা পাওয়া, যা মধ্যপ্রাচ্যের এই অস্থিতিশীল ভূখণ্ডে সাময়িকভাবে দেখা দেয়া ভারসাম্যের প্রতি হুমকি।

তিনি বলেন, ধারণা করা হয়, আত্মঘাতী হামলাকারী আইএসের সাথে সংশ্লিষ্ট গাজা’র সালাফি আন্দোলনের একজন সদস্য।

তিনি আরো বলেন, খেলাফত ফিরিয়ে আনার প্রবক্তা সালাফিদের উত্থান গাজায় নতুনভাবে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।

গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে গাজায় গড়ে ওঠা সালাফি আন্দোলনের তুলনায় হামাস একটি মধ্যপন্থী দল। এই সালাফি আন্দোলন মূলত সৌদি আরবে ধর্মীয় শিক্ষা-গ্রহণকারী ফিলিস্তিনি ছাত্রদের হাতে গড়ে ওঠে।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, গাজা’র এ সালাফি আন্দোলনগুলো এখনও সৌদি আরব থেকে অর্থ এবং সমর্থন পেয়ে থাকে। গাজা’র এই সালাফি গ্রুপগুলো জুন্দু আনসারউল্লাহ, জায়সুল উম্মাহ্, জায়সুল ইসলাম, জামায়াতুত তাওহিদ ওয়াল জিহাদ এই ৪টি প্রধান দল দ্বারা গঠিত।

লেখক আরো জানান, গাজায় আইএস এর যতটুকু সফলতা তা সেখানকার সালাফিদের উপস্থিতির কারণেই সম্ভব হয়েছে। গাজায় সালাফিরা প্রাথমিকভাবে শক্তি অর্জন করেছে ২০০৭ সালে হামাস এবং ফাতাহ’র মাঝে কোন্দলের কারণে প্রশাসনিক শুন্যতা থেকে।

তিনি আরো বলেন, সালাফি এই দলগুলো ২০০৬ সালে ফিলিস্তিনের জাতীয় নির্বাচনে হামাসের অংশগ্রহণের কারণে তাদের কাফের মনে করে এবং সালাফিরা ইজরাইলের সাথে হামাসের যুদ্ধ বিরতির কারণে একাধিকবার হামাসের সমালোচনা করেছে। হামাসের করা যুদ্ধবিরতি ভেঙে দেয়ার জন্য তারা ইজরাইলের উপর বিভিন্ন সময়ে রকেট হামলা করেছে।

মূলত হামাসের চরমপন্থী কিছু সদস্য দলচ্যূত হয়ে সালাফিদের সাথে যোগ দিয়ে সামরিকভাবে ইজরাইলের মোকাবেলা করার আহ্বান জানায়।

লেখক বলেন, গাজায় সালাফিদের উত্থানে ইজরাইল খুবই উদ্বিগ্ন। কারণ এটা ইজরাইলের জন্য নতুন নিরাপত্তা হুমকি।

লেখকের মতে, হামাস এবং গাজা’র সালাফিপন্থী গ্রুপগুলোর হামলার মাঝে তারতম্য করা ইজরাইলের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই যেকোন স্বশস্ত্র হামলার জবাবে ইজরাইল হামাসের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা করতে পারে।

পাশাপাশি তিনি গাঁজায় ফিলিস্তিনি যুবকদের বেকার প্রজন্ম গড়ে ওঠায় সালাফিপন্থীদের দলে তাদের যোগ দেয়ার আশংকা ব্যক্ত করেন, যা বড় ধরণের বিপর্যয় টেনে আনতে পারে।

সূত্র : আল-জাজিরা


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ