আওয়ার ইসলাম: ঢাকা জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা’র পরিচালক, হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর সভাপতি ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব প্রখ্যাত আলেমে-দ্বীন আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর উদ্যোগে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে দ্বিতীয় পর্যায়েও ব্যাপক ত্রাণ বিতরণ করা হয়।
ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে ছিল শুকনো খাবারের প্যাকেট ও নগদ অর্থ বিতরণ, নলকূপ স্থাপন এবং মসজিদ নির্মাণ।
গত ১ অক্টোবর থেকে চার দিন ধরে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় কক্সবাজারের বিভিন্ন রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা’র শিক্ষক প্রতিনিধি দলের মাধ্যমে এসব ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা’র সহযোগী পরিচালক ও উত্তরা ১২নং সেক্টর জামে মসজিদের খতীব হাফেজ মাওলানা নাজমুল হাসান, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার মুহাদ্দিস ও দারুল উলূম শ্রীপুরের পরিচালক মুফতী মুনির হোসাইন কাসেমী, মুহাদ্দিস মুফতী জাকির হোসাইন, মাওলানা সানা উল্লাহ মাহমুদী ও মাওলানা কেফায়েতুল্লাহ আযহারী প্রমুখ।
প্রতিনিধি দলটি গত ১ অক্টোবর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত কক্সবাজারের বিভিন্ন রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় বিভিন্ন ধরনের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।
ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে ছিল প্রায় ২ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট ও ৭ লক্ষ টাকা নগদ বিতরণ, ৭টি মসজিদ নির্মাণের সকল ব্যয় নির্বাহ এবং বিশুদ্ধ সুপেয় পানির জন্য ১০টি নলকূপ স্থাপন।
ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শেষে প্রতিনিধি দলটি আজ (৪ অক্টোবর) বুধবার সকালে ঢাকার উদ্দেশ্যে ফিরে যান।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৬ ও ১৭ সেপ্টেম্বর জমিয়ত মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর উদ্যোগে প্রথম দফা দুই দিন ব্যাপী ত্রাণ বিতরণ করা হয়।
ত্রাণ বিতরণ উপলক্ষ্যে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী এক বিবৃতিতে বলেন, শুধু ঈমান-আক্বীদার বিষয়ে নয়, বরং আদর্শ সমাজ বিনির্মাণ এবং অসহায় আর্তমানবতার পাশে সহযোগিতা নিয়ে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রেও আমাদের দেশের কওমী ওলামায়ে কেরাম ব্যাপক প্রশংসনীয় ভূমিকা ও অবদান রেখে আসছেন।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও মগদস্যু কর্তৃক রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে পরিচালিত ইতিহাসের বর্বরতম গণহত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ ও দেশ থেকে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে আমরা শুরু থেকে বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণ করে ব্যাপক প্রতিবাদি প্রতিবাদি কর্মসূচী অব্যাহত রাখার পাশাপাশি বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পাশে সাধ্যমতো ত্রাণ সহযোগিতা নিয়েও দাঁড়িয়েছি।
ত্রাণ শিবিরগুলোতে শুরু থেকেই হাজার হাজার উলামায়ে কেরাম, মাদ্রাসা ছাত্র, তাবলীগ জামাতের মুবাল্লিগ ও দ্বীনদার মুসলমান ভাইয়েরা ব্যাপক মানবিক সহযোগিতা দিয়ে আসছেন। আর্তমানবতার পক্ষে উলামায়ে কেরামের এমন প্রশংসনীয় ভূমিকা দেশবাসীর নজর কেড়েছে।
আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী হতাশা প্রকাশ করে বলেন, মুসলমানদের পবিত্র কুরবানীর সময় যেসব সেক্যুলারকে পশুপ্রেমে অস্থির হয়ে উঠতে দেখা যায়, সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে যাদেরকে সবসময় সোচ্চার দেখা যায়, রোহিঙ্গা মুসলমানদের মানবিক এই বিশাল বিপর্যয়ে তাদেরকে নিরব-নিশ্চুপ থাকতেই আমরা দেখছি। মূলতঃ এরা মোটেও মানবতাবাদি নয়, বরং তারা ইসলাম বিদ্বেষী চরম সাম্প্রদায়িক। জাতির সামনে এদের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও মানবতাবাদের ভন্ডামির মুখোশ খসে পড়েছে।
আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, বাংলাদেশের ওলামায়ে কেরামা মানবিক প্রশ্নে শুধু মুসলমানদের পাশে দাঁড়ায় না, বরং অমুসলিমদের পাশেও সহযোগিতা নিয়ে হাজির হয়। যার প্রমাণ বিভিন্ন সময়ে আলেমরা দিয়ে এসেছেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে শুধু মুসলিম শরণার্থী নয়, বরং হিন্দু শরণার্থীদের পাশেও উলামায়ে কেরাম ও ইসলামী নেতৃবৃন্দ সমান গুরুত্ব দিয়ে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে সত্যিকারের সুশাসন ও আদর্শ সমাজ গড়ে তুলতে হলে সব পর্যায়েই উলামায়ে কেরামকে নেতৃত্বে আনতে হবে।
আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর নেতৃত্বে রোহিঙ্গাদের মাঝে অর্থ ও ত্রাণ বিতরণ