রকিব মুহাম্মাদ : রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর চলমান নির্যাতন বন্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অবরোধ ও অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী সেনা কর্মকর্তাসহ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা এবং তাদের সম্পদ জব্দ করার কথাও বলছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর অবরোধ আরোপেরও আহবান জানিয়ে এইচআরডব্লিউ বরিবার এক বিবৃতি প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, গত ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যের কয়েকটি পুলিশ পোস্টে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর থেকেই সেনারা সেখানে অভিযানের নামে গণঅগ্নিসংযোগ, হত্যা, লুটতরাজ চালাচ্ছে। সেনারা শত শত গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে, প্রাণ বাঁচাতে প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
সংগঠনটি নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেছে, সদস্য দেশগুলোর উচিত রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য মিয়ানমারের ওপর ‘টার্গেটেড’ অবরোধ আরোপ করা। দায়ী সেনা কর্মকর্তা ও সদস্য-সহ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং তাদের সম্পদ জব্দ করা জরুরি।
একইসঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিভিন্ন দেশের সহযোগিতা নিষিদ্ধ করা এবং গুরুত্বপূর্ণ সেনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন বন্ধ করতে পদক্ষেপ নেওয়া।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক অ্যাডভোকেসি পরিচালক জন সিফটন বলেছেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধন অভিযান চালাচ্ছে মিয়ানমারের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী। সময় এসেছে সেনাদের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার। যাতে মিয়ানমারের জেনারেলরা বিষয়টিকে আর উপেক্ষা না করে।
বিবৃতিতে এইচআরডব্লিউ বলেছে, রোহিঙ্গাদের মানবিক সংকট ও মানবাধিকার পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে থেকে সময় নষ্ট করা উচিত নয় উদ্বিগ্ন দেশগুলোর। তাদের উচিত নৃশংসতার জন্য সেনাবাহিনীর দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা, তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা, সব রকম সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি, সহায়তা এবং সহযোগিতা বন্ধ করা। বিশেষ করে কমান্ডার ইন চিফ সিনিয়র জেনারেল মিন অং হেইংসহ মিয়ানমারের জ্যেষ্ঠ নেতৃত্বকে যুক্তরাষ্ট্রের স্পেশাল ডিজাইনেটেড ন্যাশনালস (এসডিএন) তালিকাভুক্ত করা। এই তালিকায় থাকা ব্যক্তিদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রতিষ্ঠানে আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয় না। তাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না এবং তাদের সম্পদ জব্দ করা হয়।