আওয়ার ইসলাম : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী বলেছেন, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার বিনা অজুহাতে রোহিঙ্গা মুসলমান নারী, পুরুষ ও শিশুদের নির্বিচারে হত্যা করছে, মুসলমানদের বসত বাড়ী জ্বালিয়ে দিচ্ছে, নদীতে ডুবিয়ে মারছে, মায়ের কোল থেকে ছোট শিশুকে কেড়ে নিয়ে বুট দিয়ে পাড়িয়ে হত্যা করছে, মা-বোনদের ধর্ষণ করছে, এমনকি গর্ভবর্তীদের মায়েদের পেট চিড়ে বাচ্চা হত্যা করছে; এমন নির্মম ও নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ কোনভাবেই সহ্য করা যায় না।
তিনি এই নির্মমতার বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্ব, আরবলীগ, ওআইসি, জাতিসংঘকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে জোর দাবি জানান।
মাওলানা মাদানী বলেন, মুসলিম গণহত্যা বন্ধে বিশ্বমুসলিমকে এক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারলে ওদের হিংস্রতা আরো বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের স্টিমরোলার বন্ধ না করলে প্রয়োজনে বাংলাদেশের ঈমানদার জনতা বার্মা দূতাবাস, জাতিসংঘ দূতাবাস ঘেরাও করবে। তাতেও কাজ না হলে মিয়ানমার অভিমুখে লংমার্চসহ আরো কঠোর কর্মসুচী দিতে বাধ্য হব।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মিয়ানমারে মুসলিম গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর আয়োজিত বিশাল মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক হাফেজ মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন ও দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী আশরাফুল আলম, প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, শ্রমিকনেতা মাওলানা খলিলুর রহমান, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন, এবিএম জাকারিয়া, হাফেজ ছিদ্দিকুর রহমান, মাওলানা এইচ এম সাইফুল ইসলাম, মাওলানা শেখ নূরনাবী, মুফতি মাসউদুর রহমান চাঁদপুরি, অধ্যাপক ফজলুল হক মৃধা, যুবনেতা মুফতি মানসুর আহমাদ সাকী, ছাত্রনেতা সিরাজুল ইসলাম, নকীব বিন হোসাইন প্রমুখ।
অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, মিয়ানমারে সেনাবাহিনী-পুলিশ ও রাখাইন বৌদ্ধদের দ্বারা বর্বরোচিত রোহিঙ্গা মুসলিম গণহত্যা, ধর্ষণ, বাড়ী-ঘরে অগ্নিসংযোগ ও নির্যাতন চালিয়ে বার বার মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের সকল প্রকার নাগরিক ও মানবিক অধিকার হরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণহত্যা ও ধর্ষণের বিচার এবং মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যে মানবিক বিপর্যয় রোধ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করতে হবে।
মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণেই বাংলাদেশে আশ্রয় দিতে হবে এবং এই সমস্যা সমাধানে মিয়ানমার সরকারকে চাপ দিতে হবে।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের জান্তা সামরিক বাহিনী যেভাবে বর্বরতা করছে তাতে কোন পশুও পশুর উপর এত হিংস্র আঘাত করে না। ওরা জীব-জানোয়ারকেও হার মানিয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, রোহিঙ্গা মুসলমানরা মজলুম। তারা নির্যাতিত, নিপীড়িত, অসহায়। তাদের মানবিক কারণেই স্বদেশে ফিরিয়ে নিয়ে নাগরিক সকল প্রকার অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। মানবিক কারণে আশ্রয়ের জন্য আসা রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিতে হবে।
মুসলিম গণহত্যার প্রতিবাদে ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ বিক্ষোভ সমাবেশ, ৩০ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ ৩১ আগস্ট যুব আন্দোলনের মানববন্ধন কর্মসুচী ঘোষণা করা হয়।