বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

৭ খুন মামলার কৌঁসুলির মেয়েকে বিষ খাইয়ে হত্যার চেষ্টা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলা পরিচালনা করা নারায়ণগঞ্জ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওয়াজেদ আলী খোকন টার্গেটে পরিণত হলেন। তার মেয়ে মাইশা ওয়াজেদ প্রাপ্তিকে (১৬) হত্যা ও অপহরণের চেষ্টা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

ওই সময়ে বিষ মেশানো কিছু ওই মেয়ের মুখে প্রবেশ করিয়ে অচেতন করে অপহরণের চেষ্টা চালায়। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের বিপরীতে হাজী মঞ্জিল ভিলার নিচ তলায় ওই ঘটনা ঘটে। এর আগে ২২ আগস্ট মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় নিম্ন আদালত প্রদত্ত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২৬ জনের মধ্যে ১১ জনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। আর বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ডপ্রাপ্ত অপর ৯ জনের সাজা আগেরটিই বহাল আছে।

এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২৬ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে। নারায়ণগঞ্জ আদালতের পিপি ছিলেন ওয়াজেদ আলী খোকন। পরিচালনা করতে গিয়ে কখনো আসামি পক্ষের চোখ রাঙানি, আসামি পক্ষের আইনজীবীদের রোষানলে পড়লেও শেষতক কড়াভাবেই আইনী লড়াই চালান ওয়াজেদ আলী খোকন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাজী মঞ্জিলের চতুর্থ তলায় তৌহিদুল ইসলামের ‘ম্যাথ’ কোচিং সেন্টারে প্রাইভেট পড়াশোনা করে প্রাপ্তি। সে নারায়ণগঞ্জ এবিসি স্কুলের ও লেভেলের ছাত্রী। আর তৌহিদুল ইসলামও ওই স্কুলের শিক্ষক। এখানে বিকেল ৪টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত কোচিং পড়ানো হয়।

প্রতিদিনের মত বিকেল সাড়ে ৪টায় সে প্রাইভেট পড়ার জন্য আসে। বিকেল সোয়া ৬টায় কোচিং শেষে ভবন থেকে নিচে নামার সময়ে বঙ্গবন্ধু সড়কে একটি সাদা রঙয়ের ক্যারিনা গাড়িতে করে কয়েকজন যুবক এসে তার গতিরোধ করে। তখন তাকে বলে, তুমি কী ওয়াজেদ আলী খোকনের মেয়ে। প্রাপ্তি তখন হ্যাঁ জবাব দেয়। পরে ওই লোকজন বলে, তোমার বাবা তো একটা ভালো কাজ করেছে। সে ভালো আইনজীবী। সে ভালো কাজ করেছে। তাই তোমাকে মিষ্টি খাওয়াবো।

তখন প্রাপ্তি মিষ্টি খেতে অনীহা প্রকাশ করে। এক পর্যায়ে লোকজন একটি পলিথিনে থাকা বিষাক্ত কিছু জোর করে প্রাপ্তির মুখে ঢেলে দেয়। তখন সে কোনমতে ওই স্থান থেকে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। আশেপাশের লোকজন বিষয়টি দেখে ফেলায় দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এক পর্যায়ে প্রাপ্তি মুঠোফোনে বিষয়টি তার বাবা ওয়াজেদ আলী খোকনকে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে যান। প্রথমে তাকে শহরের ৩০০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে আশংকাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার মঈনুল হক বলেন, ‘আমরা প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবার থেকে জেনেছি ৩ যুবক এসে প্রাপ্তিকে বিষাক্ত কিছু খাওয়ানোর চেষ্টা করেছে। বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’

সাত খুনের মামলা পরিচালনার কারণেই কী এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, ‘পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সাত খুনের মামলার কারণে মিষ্টি খাওয়ানোর নামে বিষ খাওয়ানেরা চেষ্টা করা হয়। তবে পুরো বিষয়গুলো আমরা তদন্ত করে দেখছি। তদন্তের আগে স্পষ্ট করেই বলা যাচ্ছে না।’

এদিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তার একেএম তারেক জানান, প্রাপ্তিকে বিষাক্ত কিছু খাওয়ানো হয়েছিল। সেটা ইতোমধ্যে ওয়াশ করা হয়েছে। এখন অবস্থা শংকামুক্ত।

সাত খুন মামলায় ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল, শাস্তি কমলো ১১ জনের


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ