চট্টগ্রামে নবম শ্রেণির এক প্রশ্নপত্রে শেখ মুজিবকে অবমাননা করার এক মামলায় এলাকার ১৩ জন শিক্ষককে আদালত জেল হাজতে পাঠিয়ে দিয়েছে।
২০১৬ সালে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মাধ্যমিক স্কুলের হাফ-ইয়ারলি পরীক্ষার জন্য তৈরি একটি প্রশ্নপত্রে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবকে স্থানীয় একজন বিএনপি নেতার সাথে তুলনা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।
সাথে সাথেই মূল প্রশ্নকর্তা গোকুল বড়ুয়া, যিনি স্থানীয় বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক, এবং প্রশ্ন তৈরি কমিটির ১২ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। অবশ্য পরে তারা জামিন পেয়েছিলেন।
পরে চট্টগ্রামের একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি ঐ ১৩ জন শিক্ষককে অভিযুক্ত করেন।
চট্টগ্রামের বাঁশখালি থানার ওসি আলমগির হোসেন জানিয়েছেন, ঐ তদন্ত রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে পুলিশ ঐ ১৩ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা দায়ের করে।
অভিযুক্ত শিক্ষকরা আজ (বুধবার) আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে, আদালত তা খারিজ করে তাদের জেল হাজতে পাঠিয়ে দিয়েছে।
পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, নবম শ্রেণীর 'বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়ে'র ওপর প্রশ্নপত্র নিয়ে অভিযোগের সূচনা।
বাঁশখালিতে একটি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে সহিংসতা এবং ভাঙচুর ও প্রাণহানির প্রসঙ্গ তুলে ঐ প্রশ্নপত্রে বলা হয় 'এল' নামে একজন স্থানীয় চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে গ্রামবাসী আবার ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়, যেমন ১৯৭১ সালে লণ্ডভণ্ড বাংলাদেশের মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। প্রশ্ন ছিল - ঐ এলের সাথে কোন নেতার তুলনা করা যায়?
ঘটনাক্রমে বাঁশখালি বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন স্থানীয় সাবেক একজন ইউপি চেয়ারম্যান, যিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত।
এই সূত্রেই অভিযোগ করা হয়, প্রশ্নপত্রে একজন স্থানীয় রাজনীতিকের সাথে তুলনা করে শেখ মুজিবকে অবমাননা করা হয়েছে যা দেশদ্রোহের সামিল।
অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।