জাকারিয়া হারুন : এক বাবার গলা পর্যন্ত বন্যার পানি। দুই হাতে আকাশের দিকে তুলে শিশুটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বন্যার পানি ঠেলে ঠেলে তিনি যাচ্ছেন নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে। যেমন অসহায় শিশুর মুখ, তার চেয়ে ঢের বেশি অসহায় বাবার মুখ। কেমন করে তিনি বাঁচাবেন তাঁর এই কয়েক মাসের নাড়িছেঁড়া ধন সন্তানকে! সন্তানকে বাঁচানোর জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা করে যাচ্ছেন বাবা।
কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের অনেকাংশে জেগে নেই একটুখানি শুকনো মাটি। নৌকায় আশ্রয় নিয়েছে বহু পরিবার। এইমাত্র সেই নৌকায় জন্ম নিয়েছে একটি শিশু। মায়ের বুকের দুধ পাচ্ছে না। কেমন করে পাবে? গত প্রায় ১০ দিন ধরে অভুক্ত মা, অভুক্ত পুরো পরিবার। ১০ দিনেও পরিবারটির কাছে ত্রাণ পৌঁছায়নি।
এদিকে কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের বানভাসীদের মাঝে ৩০০টি পরিবারের মাঝে ৪ লক্ষ টাকার ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করবেন হাফেজ্জী হুজুর রহ. সেবা সংস্থা।
আগামীকাল সোমবার দুই প্রাইভেটকার ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের বানভাসীদের উদ্দেশ্যে মোহম্মদপুর হাউজিং থেকে ছাড়বে। ৩০০ প্যাকেট ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করবে সংস্থাটি। পাশাপাশি মসজিদ, মাদরাসার সংস্কারে নগদ অর্থ সহায়তা দিবে।
ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে আছে শুকনো খাবার, আরো ৫ কেজি চাল, ১ কেজি মসুর ডাল, ১ কেজি তেল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি পেঁয়াজ, ১ কেজি লবণ, খাবার স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলয়েড।
উল্লেখ্য গত ১৫ আগস্ট মঙ্গলবার কুড়িগ্রামের বানভাসিদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করে হাফেজ্জী হুজুর রহ. সেবা সংস্থা।
হাফেজ্জী হুজুর রহ. সেবা সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাফেজ মাওলানা রজিবুল হক বলেন, আমরা আর্ত মানবতার সেবায় বরাবরই কাজ করে যাচ্ছি। বানভাসীদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ আমাদের অন্যতম নৈতিক দায়িত্ব। মানবসেবা ইসলামের অনন্য বৈশিষ্ট্য। তাই আসুন সকলে আর্ত মানবতার সেবায় এগিয়ে আসি। নিজেদের সাধ্য অনুযায়ী অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াই।