আওয়ার ইসলাম : ভারতে বসবাসরত আনুমানিক প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গার সবাইকে দেশটি ত্যাগ করতে হবে বলে জানিয়েছেন ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিরণ রিজিজু। এমনকি এদের মধ্যে যারা জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার তালিকাভুক্ত তারাও ভারতে থাকতে পারবেন না।
রিজিজু বলেন, অবৈধভাবে ভারতে বসবাস করা এই রোহিঙ্গা মুলিমদের বিতাড়ন পর্ব ধারাবাহিকভাবে চলবে। এক লিখিত বিবৃতিতে তিনি জানান, ১৯৪৬ সালের ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুসারে অবৈধভাবে ভারতে বসবাসকারী রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিতাড়ন করা হবে। এজন্য কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলোকে টাস্ক ফোর্স গঠন করারও নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলাভিত্তিক অবৈধভাবে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের চিহ্নিত করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
১৯৯০ সালের পর বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ মিয়ানমার থেকে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এর কিছু অংশ ভারতেও প্রবেশ করে। সমুদ্রপথ ছাড়াও চীন ও বাংলাদেশ হয়ে রোহিঙ্গারা ভারতে আসে। ভারতের জম্মু, উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, দিল্লি, হায়দারাবাদ ও রাজস্থানে রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। মিয়ানমার থেকে ভারতে গিয়ে বসবাসকারী রোহিঙ্গা মুসলিমের সংখ্যা কমপক্ষে ৪০ হাজার। জাতিসংঘের হিসাব বলছে, দেশটিতে মাত্র ১৪ হাজার রোহিঙ্গার নিবন্ধন আছে। তবে নিবন্ধন থাকলেও এদের সবাইকেই এখন ভারত ছাড়তে হচ্ছে।
ভারতে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, নয়াদিল্লির এই পরিকল্পনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ভারত যেটা করতে যাচ্ছে, সেটা অসাংবিধানিক। তবে এ ব্যাপারে মিয়ানমার সরকারের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
গত বছর ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের এক তল্লাশি চৌকিতে সন্ত্রাসী হামলায় নয় পুলিশ সদস্য নিহত হন। এরপর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ নামের ওই অভিযানে রোহিঙ্গারা খুন, ধর্ষণের শিকার হন এবং তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, রোহিঙ্গাদের বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে জাতিসংঘ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অভিযোগ, রোহিঙ্গাদের জাতিগতভাবে নির্মূলের চেষ্টা করছে মিয়ানমার সরকার। তাদের ওপর নির্যাতনকে গণহত্যা বলেও আখ্যা দিয়েছে অনেকে। রয়টার্স।
-এজেড