দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আশা করা হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সব দলের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ অস্থায়ী সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে পারে।
সম্প্রতি পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণমাধ্যম কর্মীর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় মাওলানা মাহফুজুল হক একথা বলেন। আগামী নির্বাচন ছাড়াও নানা বিষয়ে প্রতিবেদকের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোট ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের বাইরে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল।
মাওলানা মাহফুজুল হক আরও বলেন, আমরা বর্তমানে কোনো জোটে নেই। তবে ২০-দল ও ১৪-দলীয় জোটের বাইরের কিছু ইসলামী দল নিয়ে জোট গঠনের চেষ্টা করছি। নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেওয়া নারী নেতৃত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কমিটিতে নারী অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি জোরালোভাবে দেখছি। তবে কমিটিতে নারীদের অংশগ্রহণ করতে গিয়ে ইসলামী শরিয়তের পর্দার বিধানটি লঙ্ঘন হয় কিনা সে বিষয়টি নিয়ে দেশের ইসলামী নেতৃবৃন্দ চিন্তা করছে এবং বিষয়টি নিয়ে ইসির নতুন করে ভাবা উচিত।
বর্তমান সরকারের অধীনে আগামীতেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস অংশ নেবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি বুঝে দলের কেন্দ্রীয় ফোরামে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আগামী নির্বাচনের সম্ভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, এ মুহূর্তে তো কোনো লক্ষণ দেখছি না।
ইভিএম প্রসঙ্গে বলেন, উন্নত অনেক দেশেই ইভিএম বন্ধ করে দিচ্ছে। আর আমাদের জাতীয় নির্বাচনের যে সময় রয়েছে এর মধ্যে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা কঠিন হবে। সুতরাং এ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করার সুযোগ আছে বলে মনে হচ্ছে না। তিনি বলেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অপরিহার্য।
নির্বাচন কমিশন চাইলে অনেক কিছু করতে পারে না। কমিশনকে স্বাধীনভাবে চলার সুযোগ সরকারকে করে দিতে হবে। তিনি বলেন, সব দলের অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এটা সবার প্রত্যাশা। তবে এজন্য সরকারকে সে পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি না হলে এ রোডম্যাপ কোনো কাজে আসবে না।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতি প্রসঙ্গে মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি তারা কেউ দেশের স্বার্থে রাজনীতি করছে না। তারা ক্ষমতায় থাকা ও ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য রাজনীতি করছে। তাই দেশের সর্বনাশ হলেও তাদের কিছু যায় আসে না। এ ধরনের মনোভাবের কারণে দেশের মানুষের মাঝে রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয়ে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি হচ্ছে।
-এজেড