আওয়ার ইসলাম : হাতে পাঁচটার পরিবর্তে ছয়টা বা সাতটা আঙুল। এমন বিষয় অনেকেরই নিশ্চয়ই চোখে পড়েছে। সেই আঙুলের মাপ বেশিরভাগ সময়ই তুলনামূলক ছোট হয়ে থাকে। কিন্তু ১২ ইঞ্চি, অর্থাৎ এক ফুট লম্বা আঙুল কখনই চোখে না পড়ার কথা, কিন্তু এটা সত্যি ১২ বছরের কিশোর তারিকের হাতের আঙুল এক ফুট লম্বা। এই অদ্ভুদ ঘটনাটি ঘটেছে ভারতে।
চিকিৎসকদের মতে, একে ‘এলিফ্যান্ট ফুট’ রোগ বলা হয়। রোগ যাই হোক, তারিকের তো এতে কোনও দোষ নেই। তা সত্ত্বেও গ্রামের অন্ধ কুসংস্কারাচ্ছন্ন সাধারণ মানুষ তাকে দূরেই সরিয়ে রাখে। তাদের ধারণা, কোনও অভিশাপের কারণেই তারিকের হাতের আঙুলগুলি এমন হয়ে গিয়েছে। তাই তারিক গ্রামবাসীদের কাছে শয়তান বলে পরিচিত।
শুধু তাই নয়, আঙুলের এমন অদ্ভুত আকারের জন্য প্রতিনিয়তই সমস্যায় পড়তে হয় তাকে। শুধুমাত্র অস্বাভাবিক আঙুলের জন্য গ্রামের কোনও স্কুল তাকে ভরতি নিতে রাজি হয়নি। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, তারিকের আঙুল দেখে স্কুলের অন্যান্য পড়ুয়ারা ভয় পেতে পারে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তারিকের বাবা মারা গিয়েছেন। চায়ের দোকানে কাজ করে কোনওরকমে সংসার চলে তার। তাই আলাদা করে আর ডাক্তার দেখিয়ে ওঠা হয় না। তবে তারিকের বিশ্বাস, একদিন ঠিক সেরে উঠবে সে। বাকিদের মতোই সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবে।
তারিকে বলছে, “আমিও অন্য বাচ্চাদের মতো স্বাভাবিক হয়ে উঠতে চাই। তাদের মতোই স্কুলে যাওয়া, খেলাধুলো করতে চাই। সেই দিনটা নিশ্চয়ই আসবে। "
১২ বছরের এই কিশোরের একা একা থাকতে একেবারেই ইচ্ছে করে না। কিন্তু উপায় নেই, সঙ্গী-সাথী দু-একজন যাও বা ছিল, বর্তমানে আর কেউই তারিকের ধারে কাছে আসে না। সকলেই তার আঙুল দেখে ভয় পায়। এমনকী ‘শয়তান’ বলেই ডাকে পাড়ার লোকেরা। তারিক বলছে, “গ্রামবাসীরা ভাবে আমার আঙুলের এমন মাপ হয়তো কোনও অভিশাপের ফল। তাদের কিছুতেই বোঝাতে পারি না এটা একটা রোগ। চিকিৎসা করলেই সেরে উঠব। কিন্তু অর্থের অভাবেই চিকিৎসা আটকে রয়েছে। ”
তারিককে একমাত্র বোঝে তার ছোট ভাই। সেই তারিকের সব সময়ের সঙ্গী বলে জানা গেছে। তারিকের এক আত্মীয় জানান, নাবালকের বাবা বেঁচে থাকাকালে স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছে অনেকবারই তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু সকলেই বলেছেন, এর সঠিক চিকিৎসা প্রয়োজন। যা খরচ সাপেক্ষও বটে। এত অর্থ কবে, কোথা থেকে জোগাড় হবে তারিক ও তার পরিবারের জানা নেই।
-এজেড