আওয়ার ইসলাম : ভোটার তালিকা হালনাগাদে যে নীতিমালা দেয়া হয়েছে তাতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিতদেরকে ভোটার তালিকা অন্তর্ভুক্তিতে নিষেধ করা হয়েছে। ফলে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আগামী নির্বাচনে ভোট দেয়ার অধিকার হারাচ্ছেন।
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীর (জিয়ানগর) ভোটার সাঈদী মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে রাখা হয়েছে।
জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীর দায়ে সাজাপ্রাপ্তদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেয়া হবে। এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত আছে ইসির। এছাড়া যারা সাজা খেটে মারা গেছেন তারাও বাদ যাবেন। আমাদের ভোটার হালনাগাদ কর্মসূচি শেষ হয়েছে। সব তথ্য উপাত্ত হাতে আসলে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি শুরু হয় গত ২৫ জুলাই। ৯ আগস্ট পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলেছে। ইসির তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার হওয়ার যোগ্য নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করেছেন। যারা বাদ যাবেন সেই তালিকাও করেছেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এটিই হবে ভোটার তালিকা হালনাগাদের শেষ কার্যক্রম।
ইসি জানিয়েছে, ২০০০ সালের ১ জানুয়ারির আগে যাঁদের জন্ম, কিন্তু এখনো ভোটার হতে পারেননি, তাঁরা এবার ভোটার হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। আগামী বছরের ২ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। হালনাগাদে মৃত ব্যক্তিদের নাম বাদ দেওয়া হবে। একইভাবে বাদ যাবে মানবতাবিরোধ অপরাধে দণ্ডিতদের নাম।
জামায়াত নেতা সাঈদী ইন্দুরকানি উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের ১নং বেসাবুনিয়া ওয়ার্ডের ভোটার ছিলেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তবে সাঈদীর আপিলের পর ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগফাঁসির সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেয়।
এর দীর্ঘদিন পর এ রায়ের কপি প্রকাশ পেলে গত বছরের ১২ জানুয়ারি তা পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওই আবেদনে সাঈদীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ট্রাইব্যুনালের রায় পুনর্বহাল চাওয়া হয়। অপরদিকে খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন করেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। গত ১৫ মে সাঈদীর রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) দুটি আবেদনই খারিজ করে দেয় আপিল বিভাগ।
সাঈদীর নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন কি না, জানতে চাইলে পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার সহকারী নির্বাচন কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান খান বলেন, ‘সাঈদীর নাম বাদ দেয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে এমন কোন নির্দশনা পাইনি। কারা ভোটার হতে পারবে বা পারবে না, তা সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে। কমিশনই হয়ত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’
-এজেড