আওয়ার ইসলাম : ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সীমাহীন গাফিলতি ও আগাম প্রস্তুতি না নেয়ায় হজ ফ্লাইটের শিডিউল বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বিমানের হজফ্লাইটে চরম বিপর্যয়ের পরও টনক নড়েনি মন্ত্রণালয়ের। সঙ্কট এড়াতে গতকাল বুধবার ডাকা আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও ধর্মমন্ত্রী বা সচিবের অনুপস্থিতি অন্যদের মাঝে চরম ক্ষোভের সঞ্চার করে।
আর এজন্য গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত হতে হয়েছে বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননকে। তিনি যদিও সাংবাদিকদের অনেকটা আশ্বস্ত করেছেন, আজ বৃহস্পতিবার থেকেই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে। এত বেশিসংখ্যক ফ্লাইট আর বাতিল করতে হবে না। এরপরও যদি দু-একটি ফ্লাইট বাতিল হয়, শেষের দিকে অতিরিক্ত স্লটের মাধ্যমে পুষিয়ে নেয়া হবে যাতে সবাই হজে যেতে পারেন।
এ সময় তিনি জানান, কোন ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ সৌদি হজ কর্তৃপক্ষের মোয়াল্লেম ফি বৃদ্ধি, একাধিকবার হজ পালনকারীদের জন্য অতিরিক্ত দুই হাজার রিয়াল ফি ধার্য ও ই-হজ সিস্টেমে ধীরগতির কারণে একের পর এক বাতিল করতে হচ্ছে হজ ফ্লাইট।
তবে এসব ব্যর্থতার দায় কার প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী তা এড়িয়ে গিয়ে শুধু বলেছেন, এখন কাজ করার সময়। কারও দোষ না ধরে কিভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা যায় সে চেষ্টা করতে হবে। এজন্যই আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠক ডাকা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, হজ প্যাকেজ ঘোষণার বহু পরে সৌদি কর্তৃপক্ষ যারা ২০১৫ ও ২০১৬ সালে হজ করেছে- তাদের জন্য অতিরিক্ত ২ হাজার রিয়েল (৪৪ হাজার টাকা) ফি ধার্য করে। ভিসা লজমেন্ট করার সময় অনলাইনে এ রিয়াল পরিশোধ করার অপশন দেয়া হয়। যারা পরিশোধ করতে রাজি তাদেরই ভিসার কাগজপত্রে অনুমোদন দেয়া হয়। কিন্তু যারা রাজি নয়, তারা ভিসা পাচ্ছেন না।
এজন্য প্রায় ৬ থেকে ৭ হাজার হজযাত্রী ভিসা জটিলতায় পড়েছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে— কেন এ বিষয়টির নিষ্পত্তি আগে থেকেই করা হয়নি। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ছিল আগে থেকেই এ বিষয়টির নিষ্পত্তি করা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়- এ ধরনের একটা সঙ্কট দেখা দিতে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছিল হজের আইটি পরামর্শক কোম্পানি বিজনেস অটোমেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
গত বছর ৩ অক্টোবর বিজনেস অটোমেশন থেকে এ চিঠি লেখেন সাবেক হজ পরিচালক অতিরিক্ত সচিব বজলুল হক বিশ্বাস। ধর্ম মন্ত্রণালয় ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কোন ধরনের পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো তুচ্ছ বিষয় বলে উড়িয়ে দেয়।
এ প্রসঙ্গে হাব মহাসচিব বলেন, একাধিকবার হজপালনকারীদের জন্য অতিরিক্ত ২ হাজার রিয়াল ফি শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এটা সব দেশের জন্য প্রযোজ্য। অন্যান্য দেশ এ বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে নিষ্পত্তি করলেও বাংলাদেশ পারেনি। ধর্ম মন্ত্রণালয় যদি সঠিক সময়ে পদক্ষেপ নিত তাহলে আজকে এ অবস্থা হতো না।
-এজেড