জামিল আহমাদ: পোশাক-পরিচ্ছদ মানুষের দেহ সজ্জিত করা এবং সতর আবৃত করার মাধ্যম। ইসলামে পেশাকের গুরুত্ব অপরিসীম। এর দ্বারা লজ্জা নিবারণের পাশাপাশি এটা ব্যক্তিত্ব প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম। পোশাকের মাধ্যমে ব্যক্তির প্রকৃতি অনুভব করা যায়। ধর্ম-কর্ম, আখলাক থেকে নিয়ে প্রতিটি স্তরে পোশাকের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। আর এটি এমন একটি স্বীকৃত বিষয়, শুধু কুরআন হাদিসই নয় বরং মনস্তাত্বিক, বিজ্ঞানীরাও তা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন।
সুতরাং মানব সমাজের ভঅরসাম্য রক্ষায় ইসলামি পোশাকের বিকল্প নাই।ইসলাম পোশাকের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে। বলা যায় এক্ষেত্রে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি সহজ সরল। কারো জন্য সেলোয়ার কামিজ কিংবা জুব্বা গোলটুপি বাধ্যতামূলক করা হয়নি। সাধারণ ঢিলে-ঢালা মার্জিত, পরিছন্ন পোশক হলেই চলে। আর প্রাকৃতিক দাবি হলো , স্থান কাল পাত্র ভেদে পোশাকের তারতম্য হওয়া। তাই তো দেখা যায় কখনো পাতলা আবার কখনো মোটা কাপড় পরা হয়। পোশাকের ক্ষেত্রেও ইসলামের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে।আর সে নীতিমালায় নিজের পোশাকে নিজেকে সাজিয়ে নিন।
মুসলমানের জন্য ধুতি পরার বিধান : কোনো মুসলমানের জন্য ২টি শর্তে ধুতি পরা জায়েয। ১. হিন্দুদের স্টাইলে পরতে পারবে না, ২. এমনভাবে পরবে না যাতে সতর খোলা থাকে কিংবা সতর খুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।[ মিরকাতুল মাফাতিহ: ৮/২২২, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া: ২৭/৪১২]
নারীদের সাদা কাপড় পরার বিধান : মহিলাদের জন্য যে কোনো রঙের কাপড় পরিধান করা জায়েয। চাই সেটা সাদা হোক বা অন্য কোনো রঙের কাপড় হোক।[ আদ-দুররুল মুখতার:৯/৫১০, ফাতাওয়ায়ে হাক্কানয়া: ২/৪০৯ ]
ফাড়া পাঞ্জাবী পরার বিধান : শরয়ী পোশাক হওয়ার জন্য কয়েকটি বিষয় লক্ষণীয়। ১. পরিপূর্ণ ভাবে সতর ঢাকা, ২. সৌন্দর্যের জন্য হওয়া, ৩. শরীয়তে নিষিদ্ধ না হওয়া, ৪. রিয়া বা লৌকিকতা না থাকা, ৫. বিধর্মীদের সাথে সাদৃশ্য না হওয়া। আর ফাড়া পাঞ্জাবী দ্বারা যেহেতু এই উদ্দেশ্যগুলো অর্জন হয় তাই এর দ্বারাও সুন্নত আদায় হবে। [ আবু দাউদ শরীফ: ২/৫৫৯, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া: ২৭/৩৯৪]
নারীদের সুন্নতি পোশাক : মেয়েদের পোশাক এমন হওয়া চাই যা পরিধান করার দ্বারা তাদের সতর পরিপূর্ণ ভাবে আবৃত হয়। আর মেয়েদের সতর হলো চেহারা, হাতের কব্জি ও পায়ের পাতা ছাড়া বািকি সবটুকু। সুতরাং তারা এমন পোশাক ব্যবহার করবে যার দ্বারা তাদের পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঢেকে যায়। আর বর্তমানে মেয়েদের অধিক সতর ঢেকে রাখা সম্ভব হয় সেলোয়ার কামিজ ও ওড়নার মাধ্যমে। তবে সেলোয়ার কামিজ ঢিলেঢালা ও মোটা কাপড়ের হওয়া বাঞ্চনীয়। যাতে শরীরের অঙ্গ-প্রতঙ্গ ফুটে না উঠে এবং কামিজ ফুলহাতা বিশিষ্ট ও হাঁটুর নীচ পর্যন্ত লম্বা হওয়ার সাথে সাথে বড় ওড়না ব্যবহার করা। [আবু দাউদ শরীফ: ২/৫৬৭, কিফায়াতুল মুফতি:৫/৪৩১ ]
পাঞ্জাবী-পায়জামার সাথে ওড়না ব্যবহারের বিধান : কোনো মহিলার জন্য পুরুষের পোশাক বা পুরুষের জন্য মহিলার পোশাক পরিধান করা জায়েয নয়। আর ওড়না যেহেতু মহিলার পোশাক সুতরাং ছেলেদের জন্য ওড়না ব্যবহার জায়েয নেই। [বুখারী শরীফ : ২/৮৭৪, কিফায়াতুল মুফতি:৯/১৬১]
শাড়ি পরিধানের বিধান : যদি শাড়ি পরিধান করার দ্বারা সতর ঢাকা সম্ভব হয় তাহলে শাড়ি পড়তে কোন সমস্যা নেই। আর যদি সতর ঢাকা সম্ভব না হয় তাহলে তা পরিধান করে গায়রে মাহরামের সামনে যাওয়া বা বাহিরে বেরুবার অনুমতি নাই।[আবু দাউদ শরীফ: ২/৫৫৮, আপকে মাসায়েল ৮/৩৬৬ ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া: ২৭/৪৩২]
সাদা পোশাকের কেউ গ্রেফতার করতে চাইলে যা করণীয়