আওয়ার ইসলাম: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণটি একেবারেই গতানুগতিক। আত্মতুষ্টি ও আত্মস্তুতিতে ভরা। উন্নয়নের যে ফিরিস্তি তিনি তার ভাষণে দিয়েছেন, এর অনেক কিছুই ভুল, অসত্য, ভিত্তিহীন এবং এতে রয়েছে এন্তার শুভংকরের ফাঁক। দেশের মানুষ তাদের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতায় বোঝেন দেশ উন্নয়ন নাকি অবনতির পথে এগোচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার রাতে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সরকারের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষ আশা করেছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে একটি রাজনৈতিক সমঝোতার আভাস দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে তা না থাকায় এ বক্তব্য সময়ের চাহিদা মেটাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি দাবি করেন, সরকারের বৈধতা ও নৈতিকতার সংকট দেশের প্রধান সমস্যা। অথচ প্রধান সেই রাজনৈতিক সংকট তিনি এড়িয়ে গেছেন।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, সরকার একটি ধারাবাহিকতার ব্যাপার। বৈধ কিংবা অবৈধ সব সরকারকেই সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য কিছু কাজ করতে হয়। কিছু উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিতে হয়। জাতীয় উন্নয়নের চিত্র হিসেবে সে সবের ফিরিস্তি দিলে মানুষ হতাশ হয় বলে আমরা মনে করি।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, একতরফা দোষারোপের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে প্রচ্ছন্নভাবে অগণতান্ত্রিক ও একদলীয় মানসিকতাই ফুটে উঠেছে। হামলা-মামলা, জেল-জুলুমে বিপর্যস্ত বিরোধী দলগুলো সব গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। ডেমোক্রেটিক স্পেস প্রতিদিন সংকুচিত হচ্ছে। নির্বাচনব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। দুর্নীতি, লুণ্ঠন অবাধে চলছে।
ব্যাংকগুলো ও শেয়ারবাজার লুট হয়ে গেছে। জনজীবনে নিরাপত্তা নেই, সুবিচার ও আইনের শাসন নেই, শিক্ষার মান নেমে গেছে। আয়ের বৈষম্য বেড়েছে। শিশুদের পাঠ্যপুস্তক ভুলে ভরা। গুম, খুন, অপহরণ, শিশুহত্যা, নারী ধর্ষণ নিত্যকার ঘটনা। প্রধানমন্ত্রী সবকিছু সুকৌশলে এড়িয়ে গেছেন। রাষ্ট্রীয় ও শাসক দলীয় সন্ত্রাসে সারা দেশে আজ ভীতিকর অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বিরোধী দলের কর্মসূচিতেও তারা একের পর এক হামলা ও অন্তর্ঘাতের ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী এর জন্য বিরোধী দলকে দায়ী করে অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন।
ডিএস