আওয়ার ইসলাম: জাতিসংঘের নিন্দা প্রস্তাবে ভেটো না দেওয়া ইস্যুতে মার্কিন-ইসরায়েল সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে।
ক্ষুব্ধ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাঁর দেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছেন। বড়দিনে এই হঠাৎ তলবে কূটনৈতিক মহল বেশ অবাক হয়েছে।
এদিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি স্থাপনের জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জাতিসংঘে নিন্দা প্রস্তাব পাসের পরপরই পূর্ব জেরুজালেমে আরও শত শত ভবন তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির হারেজ পত্রিকা জানিয়েছে, পূর্ব জেরুজালেমের স্থানীয় পরিকল্পনা ও অবকাঠামো-বিষয়ক কমিটি ৬১৮টি নতুন ভবন তোলার বিষয় অনুমোদন দিতে যাচ্ছে। আগামী বুধবারই এটি অনুমোদিত হতে পারে।
গত শুক্রবার ১৫ সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হয়। ভেনেজুয়েলা, মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড ও সেনেগাল সম্মিলিতভাবে এই প্রস্তাব উত্থাপন করে। এ ধরনের ইসরায়েলবিরোধী প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই ভেটো দিয়ে এলেও এবার তারা ভোটদান থেকে বিরত থাকে।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত দানিয়েল শাপিরোকে তলব করেছেন নেতানিয়াহু, যিনি ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বেও আছেন। এর আগে প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থনকারী দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের তলব করে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই তালিকায় রয়েছেন ফরাসি, ব্রিটিশ, রুশ, চীনা ও স্প্যানিশ রাষ্ট্রদূত।
অতীতে ইসরায়েলের কাজে সহযোগিতাই দিয়ে আসছিল বন্ধুদেশ যুক্তরাষ্ট্র। এবারই প্রথম ইসরায়েলের চেষ্টা-তদবির অগ্রাহ্য করে অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবে ভেটো দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ওবামা ও তাঁর সরকার।
ইসরায়েলের অভিযোগ, জাতিসংঘের এই নিন্দা প্রস্তাবের মূলে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির উদ্যোগেই নিরাপত্তা পরিষদে ইসরায়েলবিরোধী প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি হয়েছে। ওবামার সরকার অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা যেসব তথ্য পেয়েছি, তা থেকে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস ওবামা প্রশাসনই এই উদ্যোগ নিয়েছে, এর পক্ষে দাঁড়িয়েছে এবং প্রস্তাবের ভাষা ও দাবিগুলোর মধ্যে সমন্বয় করেছে।’
নেতানিয়াহু দেশটির সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, জাতিসংঘের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক আগামী এক মাসের মধ্যে পুনর্মূল্যায়ন করে দেখার জন্য তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আদেশ দিয়েছেন। জাতিসংঘের যেসব সংস্থায় ইসরায়েল যে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে, সেটাও খতিয়ে দেখার আদেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে জাতিসংঘের সংস্থাকে অনুদান দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তকে তিনি ‘পক্ষপাতমূলক’ও ‘লজ্জার’ বলেও মন্তব্য করেছেন। নেতানিয়াহু বলেছেন, অবস্থা বদলাতে কিছুটা সময় লাগবে এবং এ সিদ্ধান্ত বাতিল হয়ে যাবে।
এর আগে অবশ্য ২০১১ সালে একই ধরনের প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছিল ওবামা সরকার। তা না হলে সে সময়ই নিন্দা প্রস্তাব পাস হতো।
ডিএস