আওয়ার ইসলাম: যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ডেমক্রেট ন্যাশনাল কমিটি সহ বিভিন্ন টার্গেটে রাশিয়ার হ্যাকিংয়ের কথা অবশেষে স্বীকার করলেন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প।
দেশের শীর্ষ গোয়েন্দা প্রধানদের সঙ্গে দুই ঘন্টারও বেশি সময় বৈঠকের পর তিনি এমনটা স্বীকার করলেন। শুক্রবার ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
হ্যাকিংয়ের কথা স্বীকার করলেও তাতে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ফলাফলের ওপর কোনো প্রভাব পড়েছে বলে মনে করেন না তিনি। গোয়েন্দা প্রধান ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তারা ওই বৈঠকে রাশিয়ার হ্যাকিং বিষয়ে ট্রাম্পকে ব্রিফ করেন। এরপর ট্রাম্পের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেয়া হয়। তাতে তিনি বলেছেন রাশিয়া, চীন, অন্য কোনো দেশ, বাইরের কোনো গ্রুপ ও লোক অব্যাহতভাবে আমাদের দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায় সংগঠন, ডেমোক্রেট ন্যাশনাল কমিটি সহ বিভিন্ন সংগঠনে সাইবার হামলা চালাচ্ছে। তবে তাতে নির্বাচনের ফলের ওপর কোনো প্রভাব পড়ে নি। ভোটিং মেশিনে কোনো টেম্পারিং হয় নি।
উল্লেখ্য, ৮ই নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ও পরে ডনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার হ্যাকিংয়ের অভিযোগ নস্যির মতো ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিচ্ছিলেন। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ বিষয়ে যেসব তথ্য সামনে তুলে ধরেছেন তাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি। এমনকি কৌতুকও করেছেন তা নিয়ে।
কিন্তু শুক্রবার ব্রিফিংয়ের পরে তিনি বললেন, যুক্তরাষ্ট্রে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোতে নিয়োজিত ব্যক্তিদের প্রতি তার রয়েছে অসীম শ্রদ্ধা। তবে এই ব্রিফিংয়ের কয়েক ঘন্টা আগেও তিনি রাশিয়ার হ্যাকিংয়ের অভিযোগকে বিরোধী দলের জাদুকরী খেলা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বরাবরের মতোই তিনি রাশিয়ার দিকে এত মনোযোগ দেয়ার সমালোচনা করেন।
ডনাল্ড ট্রাম্প বলেন, পক্ষান্তরে সম্প্রতি সরকারের ২ কোটি নামের তথ্য হ্যাক করেছে চীন। ২০১৪ সালের শেষের দিকে ও ২০১৫ সালের শুরুর দিকে অফিস অব পারসোনেল ম্যানেজমেন্টের কম্পিউটার হ্যাক হওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি এ কথা বলেন। তিনি চীনের কথা উল্লেখ করে বলেন, কেন অন্যরা তা নিয়ে কথা বলছে না। এটা হলো আসলে এক রাজনৈতিক খেলা। তবে তিনি রাশিয়ার সাইবার হামলার বিষয়ে যে সংশয় প্রকাশ করেন তা বৃহস্পতিবার প্রত্যাখ্যান করেছে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা
এদিন তারা কংগ্রেসে সাক্ষ্য দেন। উল্টো তারা এদিন বলেন, তারা সর্বসম্মতভাবে একমত হয়েছেন যে, রাশিয়া সরকার যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের সময় হ্যাক করে তথ্য পাচার করেছিল। শুনানিতে সিনেট আর্মড সার্ভিসেস কমিটির কাছে ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স পরিচালক জেমস আর ক্লাপার জুনিয়র বলেছেন, ট্রাম্প এ বিষয়ে যে মন্তব্য করেছেন তা অপমানজনক। এবং জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নৈতিক আদর্শের ক্ষতি করবে তা।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে এখন যেসব তথ্যপ্রমাণ এসেঠে তা আরও সুদৃঢ়। শুক্রবার এক সাক্ষাতকারে ডনাল্ড ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়েছিল তিনি যুক্তরাষ্ট্রের আয়করদাতাদের অর্থ কিভাবে দক্ষিণাঞ্চলে সীমান্ত দেয়াল নির্মাণের কাজে ব্যবহার করবেন। জবাবে তিনি বলেছেন, এটা দ্রুত করা ভাল। তবে এর খবর নিয়ে তিনি মেক্সিকোর সঙ্গে আলোচনা করতে চান।
রাশিয়ার সাইবার হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, হোয়াইট হাউজ ও কংগ্রেসে সফলতার সঙ্গে হ্যাক করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর এভবে হামলার বিষয়টি নজরে আসেনি এটা ঠিক নয়। এ বিষয়টি নজরে রাখে রাশিয়া। ডেমোক্রেট ন্যামনাল কমিটি, হিলারি ক্লিনটনের প্রচারণা বিষয়ক চেয়ারম্যান জন পোডেস্টার ইমেইল হ্যাকিংয়ের বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো তথ্য দেয়া হয় নি।
ট্রাম্প বলেন, আমি চাই না অন্য কোনো দেশ আমাদের দেশে হ্যাকিং করুক। তারা হোয়াইট হাউজে হ্যাকিং করেছে। কংগ্রেসে হ্যাকিং করেছে। আমরা যেন বিশ্ব হ্যাকিংয়ের রাজধানীতে পরিণত হয়েছি।
ডিএস