আওয়ার ইসলাম: বৈশ্বিক চাপ থেকে বাঁচতে মংডু অঞ্চলবিষয়ক তদন্ত কমিশন আবারো মিয়ানমারের আরকান রাজ্যের রোহিঙ্গাদের বাঙালি হিসেবে অভিহিত করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
একই সাথে মংডুতে কোনো প্রকার সামরিক বাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন নিপীড়ন হচ্ছে না বলে দাবি করেছে তদন্ত কমিশন।
গত বৃহস্পতিবার মিয়ানমার সরকারের গঠিত তথাকথিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের বাঙালি বলে আখ্যায়িত করা হয়।
গত ১২ ও ১৩ নভেম্বর মংডুতে বর্মি বাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গাদের ওপর চলামান নৃশংসতার ঘটনাবলি পর্যবেক্ষণ করার জন্য একটি তদন্ত দল গঠন করেছিল মিয়ানমার সরকার। শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্রের কালো তালিকাভুক্ত একজন মেজর জেনারেলকে প্রধান করে গঠিত এ তদন্ত কমিশনের ওপর শুরু থেকেই অনাস্থা প্রকাশ করেছিল রোহিঙ্গারা।
সূত্র জানায়, মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে মংডুতে বর্মি বাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা হচ্ছে না বলে দাবি করেন তদন্ত কমিশনের প্রধান। এ ছাড়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় রোহিঙ্গারা বাঙালি জনগোষ্ঠী, তাদের মসজিদ ও ধর্মীয় স্থাপনার অবস্থাই বলে দেয় সেখানে কোনো গণহত্যা কিংবা ধর্মীয় দমনপীড়ন হয়নি।
মিয়ানমারের আরকান রাজ্য থেকে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা দাবি করেছেন, বিগত আট শতাব্দীর ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের আরাকানের আদিবাসী। কিন্তু মিয়ানমার সরকার তা স্বীকার করতে চায় না। রোহিঙ্গাদের বাঙালি অভিবাসী বলে আখ্যায়িত করে আরাকান থেকে বিতাড়িত করার জন্য সম্প্রতি ক্লিয়ারেন্স অপারেশন নামে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে তারা।
অপর দিকে গত ৩ জানুয়ারি মিয়ানমার সরকারের সংবাদপত্রে চারজন নিরীহ রোহিঙ্গা গ্রেফতার করে কাঠের বন্দুক দিয়ে জঙ্গি আখ্যায়িত করে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণের অপচেষ্টা করেছে।
সংবাদটি এমন সময় প্রকাশ করা হলো যখন বিশ্বব্যাপী মানবতাবাদীরা রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার। গ্রেফতাকৃত রোহিঙ্গারা হলো মোহাম্মদ কাইয়াস, মোহাম্মদ উল্লাহ, কমরু ও দিল মোহাম্মদ। তাদের বাড়ি বুচিডং এলাকার সাহেব বাজার। প্রথমে তাদের গ্রেফতার করে বুচিডং এলাকার বাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কাঠের বন্দুক সামনে দিয়ে জঙ্গি বলে ছবি তুলে তা সরকারি সংবাদপত্রে প্রকাশের অভিযোগ করে রোহিঙ্গারা।
মিয়ানমারের জঙ্গি দাবি সত্ত্বেও বিশ্ব মানবাধিকার কর্মীরা মনে করছেন আন্তর্জাতিক চাপ থেকে বাঁচার জন্য সে দেশের সরকার নতুন করে রোহিঙ্গাদের জঙ্গি বানানোর ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন রোহিঙ্গারা।
ডিএস