মুফতী আব্দুল্লাহ বিন রফিক: পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্য চর্চা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। আল্লাহ তা‘আলা যেমন সৌন্দর্য ও জামালের অাঁধার তেমনি তাঁর বান্দাদেরও সুন্দর করে নিপুণ কারিশমায় তিনি গড়ে তুলেছেন। তাঁর এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য একজন মানুষের জন্য যথেষ্ট। ইসলাম নারী ও পুরষকে সাজ-সজ্জা ও সৌন্দর্য চর্চার ধারণা দিয়েছে। সাজ-সজ্জা করার সময় সেসব বিষয়গুলো আমাদের মনে রাখতে হবে।
এক. সাজ-সজ্জা করতে গিয়ে নিয়ত অবশ্যই ঠিক করে নিতে হবে। দম্ভ ভাব প্রকাশ কিংবা পর পুরুষ বা অন্য নারীদের দেখানো এবং তাদের সাথে গর্ববোধ করার উদ্দেশ্যে পোশাক-পরিচ্ছেদ পরিধান করা এবং সাজ-গোজ গ্রহণ করা নাজায়েয, এ জন্য গোনাহগার হতে হবে। তেমনি অতিরিক্ত সাজ-সজ্জা ও রূপচর্চাও ইসলাম পছন্দ করে না। কারণ ইসলাম বাড়াবাড়ির অনুমোদন দেয় না।
নারীরা সাজ-গোজ করবে এটাই স্বাভাবিক তবে এটাকে নিত্য প্রয়োজনীয় কাজের রুটিনে পরিণত করা কিংবা ফ্যাশন চিন্তায় সদা ডুবে থাকা বা ব্যস্ত থাকা এটা এক আদর্শ মুসলিম নারীর সাথে কখনো যায় না। সবচে’ বড় ব্যাপার হলো, যারা উত্তম আদর্শ ও সুন্দর চরিত্রের অলঙ্কারে সজ্জিত হতে চায় তাদের এতো কৃত্রিম ও আর্টিফিশিয়ান কাজে সময় নষ্ট করার অবকাশ কোথায়?
তবে নারীরা শরীয়তের পরিসীমার মধ্যে যে সাজ-সজ্জা করবে তা যদি স্বামীর খুশী করার উদ্দেশ্যে হয়, অন্য কোনো নারী বা পর পুরুষদের দেখানো বা অহংকার প্রকাশের উদ্দেশ্যে না হয়, তাহলে এ সাজ-সজ্জার জন্য সে ছওয়াব পাবে। এতে অন্যান্যরা খুশী বা নারাজ হোক তাতে কিছু যায় আসে না।
দুই. সাজ-সজ্জা বিষয়ে যে সকল কাজ অকাট্য ভাবে ইসলাম বিরোধী। সেগুলো করা কোন ভাবেই মহিলাদের জন্য জায়েয নেই। স্বামী বা অন্য কেউ যদি এ সব কাজ করার হুকুম দেয় এবং তা পালন না করলে তারা অসন্তুষ্ট হয় তবে এ পরিস্থিতিতেও তা করা যাবে না।
হাদিসে সুস্পষ্ট আছে, ‘আল্লাহ তা‘আলার অবাধ্যতামূলক কাজে সৃষ্টির আনুগত্য জায়েয নেই।’ (সুনানে আবু দাউদ, হা: ২২৫৬)
তিন. সাজ-সজ্জার বিষয়ে যে সব কার্যকলাপ ইসলামে অনুমোদিত, সে ক্ষেত্রে স্বামী তা পালন করার কথা বললে তার পূর্ণ আনুগত্য করা স্ত্রীর কর্তব্য। এ সম্পর্কে হাদীসের ভাষ্য হল : ‘আমি যদি কাউকে কারো জন্য সিজদাহ করার নির্দেশ দিতাম, তাহলে নারীদের আদেশ করতাম তারা যেন আপন স্বামীদেরকে সিজদাহ করে।’ (তিরমিযী শরীফ : হা. নং- ১০৭৯)
চার. সাজ-সজ্জার প্রশ্নে অমুসলিমদের অনুসরণ ও অনুকরণ করা যাবে না। তাদের কোনো ধর্মীয় রীতি-নীতি মান্য করা যাবে না। এ প্রশ্নে স্বামীর কথাও মান্য করা যাবে না। স্বামী যদি বলে তা মান্য করতে এক্ষেত্রে তা মানা যাবে না।
এআর