হজস্মৃতি : বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী
বীর উত্তম মুক্তিযোদ্ধা ও সভাপতি বাংলাদেশ কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগ
আল্লাহর রহমতে এ পর্যন্ত ৫ বার হজ ও তিনবার ওমরা করতে পেরেছি। প্রথমবার হজ করেছি স্বাধীনতার দুই বছর পর। ৯৬ সালে হজে যাওয়ার সময় বাসা থেকে ইহরামের কাপড় পরে বিমানবন্দর যাই। বিমানে উঠার পর অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমাদের কাফেলার মুয়াল্লিম আমাকে সৌদি বিমানবন্দর থেকে ফিরতি ফ্লাইটে বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করে ফেলেন। তখনও বিষয়টি আমি জানতাম না। পরে যখন আমাকে জানানো হলো তখন আমি ফেরত আসতে অস্বীকৃতি জানালাম। আমি বললাম, মরতে হয় নবীর দেশে মরবো। জান্নাতুল বাকিতে আমার কবর হবে। যেখানে নবীর প্রিয় সাহাবিরা শুয়ে আছেন। এরচে’ সৌভাগ্যের আর কী হতে পারে?
পরে আমাদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিলো মক্কার খুব কাছেই। এক কিলোমিটারের ভেতরে। রাত তিনটার সময় আমি ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে যাই। তারপর আমার সহকারী সুমনকে সাথে নিয়ে চলে যাই কাবা শরিফে। তখন আমার শরীর পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠে। যে আমি কিছুক্ষণ আগেও শরীরে গুরুতর কোনো রোগের কারণে বিন্দুমাত্র শক্তি পাচ্ছিলাম না, সে আমি এখন পূর্ণ সুস্থ। সেদিনের সেই সুস্থতার স্মৃতি আমি কোনোদিন ভুলতে পারবো না। আমার হৃদয়ে গেঁথে আছে সেই খোদা তায়ালার অফুরান নেয়ামতের কথা। এরপর ভালোভাবেই হজের কাজ সমাপ্ত করি।
১১ তারিখ মাথার চুল পরিষ্কার করি। হজের কাজ শেষে অনেক দর্শনীয় স্থান ঘুরে ঘুরে দেখি। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্মৃতিবিজড়িত সেসব স্থান দেখে আমার ঈমান অনেক দৃঢ় হয়েছে। মজবুত হয়েছে। আমি সব সময় ব্যক্তিগত উদ্যোগে হজ করেছি। সরকারিভাবে হজ করার সিস্টেম চালু হয়েছে এরশাদ সরকারের প্রথম শাসন থেকে। এর আগে এই সিস্টেম ছিলো না। আমাকে শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ৯৬ এ সরকারি সুবিধায় হজ করানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলো, কিন্তু আমি গ্রহণ করিনি।
শ্রুতি লিখন, আমিন ইকবাল ও মোস্তফা ওয়াদুদ। সূত্র: রাহমানী পয়গাম