হাসান তানভীর : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের একটি অবহেলিত এলাকার নাম হাজারিবাগ। এলাকাটা পরিচিত মূলত চামড়াশিল্পের জন্যে। এখানে রয়েছে দেশের বৃহত্তম চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রকল্প। বিভিন্ন দেশ থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে আসেন চামড়াশিল্পে বিনিয়োগ করার জন্য। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার এখানকার সড়ক যোগাযোগের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ।
বেড়িবাঁধস্থ ট্যানারি মোড় থেকে নিয়ে হাজারিবাগ বাজার পর্যন্ত প্রধান সড়কে ওঠার যে একমাত্র রাস্তাটা তা প্রায় দুই বছর ধরে ইট বের হয়ে কঙ্কালের মতো হয়ে আছে। প্রায় পুরো রাস্তা থেকে পলেস্তরা উঠে যাওয়ার ফলে এখানে সেখানে তৈরি হয়েছে গর্ত। মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় বেশ কিছুদিন ধরে রাস্তায় পানি জমা হয়ে আছে। এছাড়া অতিরিক্ত কাদা হওয়ায় পায়ে হেঁটে তো দূরের কথা, রিকশা বা সিএনজি নিয়ে চলাচলও দুষ্কর হয়ে পড়েছে।
ঝাউচর থেকে হাজারিবাগ যাতায়াতকারী এক সিএনজি ড্রাইভারের সাথে কথা বললে তিনি ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বলেন, আজ তিন চার বছর ধরে রাস্তাটার এই করুণ অবস্থা। অথচ কারো কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। নানা খানাখন্দে চাকা পড়ার কারণে অল্প দিনেই টায়ার বাতিল হয়ে যায়। নোংরা পানি আর কাদার জন্য গাড়ি একটুতেই ময়লা হয়ে যায়। আমরা দায়ে পড়ে শুধু এই রাস্তায় গাড়ি চালাই। নইলে রাস্তাটা গাড়ি চালানোর অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে বহু আগেই।
ঝাউচরের বাসিন্দা খলিলুর রহমান রহমান এই রাস্তা দিয়েই চলাচল করেন। তার কাছে অনুভূতি জানতে চাইলে জানান, ভাইরে কি আর কমু, আমি প্রতিদিন বাসা থেকে হাজারিবাগ বাজারে হাঁইটা আসি। কারণ রিকশা বা সিএনজিতে আসতে গেলে আমার বুকের মধ্যে ব্যথা করে। এতো ঝাঁকি সহ্য হয় না। বাজারে আমার দোকান আছে। না আইসাও পারি না। এই রাস্তাডা ক্যান যে সারতেছে না আল্লাহই ভালো জানে।
তিনি রাস্তাটি মেরামতের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান।
রাস্তাটা সংস্কারের ব্যাপারে জানতে চাইলে ওয়ার্ড কমিশনার মোঃ সেলিম মিয়া জানান, এই রাস্তাটার সংস্কার আটকে আছে মূলত ট্যানারির জন্য। এই এলাকা থেকে ট্যানারিগুলো চলে গেলেই এটাকে সংস্কার করা হবে। সেটা কতদিন লাগতে পারে জানতে চাইলে বলেন, ট্যানারি না যাওয়া পর্যন্ত হচ্ছে না। তাতে যতোদিনই লাগুক।
হাজারিবাগ থেকে ট্যানারি সরানোর জন্য সরকারের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু সরকারি নির্দেশকে উপেক্ষা করে এখনো বহাল তবিয়তে চলছে ট্যানারির কার্যক্রম। এখন এই অযুহাতে যদি রাস্তা মেরামত স্থগিত থাকে তাহলে এলাকাবাসী চলাচল করবে কিভাবে এই প্রশ্ন এখন সাধারণ মানুষের। স্কুল কলেজগামী ছাত্রছাত্রীসহ সব শ্রেণির মানুষ কেনো দায় নিবে ট্যানারির মালিকদের খামখেয়ালির, তার উত্তর কে দেবে। এখান থেকে অতিসত্ত্বর ট্যানারি স্থানান্তর করা হোক এবং রাস্তাটাকে দ্রুত সংস্কার করা হোক এটাই এখন এলাকাবাসীর একমাত্র দাবি।
আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম / আহসান