ফয়জুল আল আমীন : হজের নামে মানবপাচারের ঘটনা নিঃসন্দেহ বড় ধরনের প্রতারণা। ধর্মীয় চেতনায় আঘাতের শামিল। এমনটা যারা করে, তাদের দুই ধরনের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানো উচিত। একটি দেশের সঙ্গে প্রতারণার জন্য অন্যটি ধর্মীয় চেতনাকে ব্যবসার পণ্য হিসেবে ব্যবহারের জন্য।
চলতি বছর ধর্ম মন্ত্রণালয় নারী হজ গমনেচ্ছুদের অভিভাবক (মাহরাম) পরিচয়ে মানবপাচার রোধে কঠোর নজরদারি করছে বলে জানা গেছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ধর্ম মন্ত্রণালয় নির্ধারিত কোটার মধ্যে নির্ধারিত সময়ে যেসব নারী হজ গমনেচ্ছু ব্যক্তি মাহরাম ব্যতীত প্রাক-নিবন্ধিত হয়েছেন বা মাহরামের প্রাক-নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের কাছ থেকে সম্প্রতি আবেদনপত্রও আহবান করা হয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সহস্রাধিক অভিভাবকের কাছ থেকে আবেদন জমা পড়ে। প্রকৃত পরিচয় গোপন করে মাহরাম সেজে কেউ যেন চলতি বছর হজে যেতে না পারে সে লক্ষ্যে আবেদনপত্রগুলো ভালভাবে যাচাইবাছাই করছে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। প্রকৃত সম্পর্ক নির্ধারণে জাতীয় পরিচয়পত্র, স্পেশাল ব্রাঞ্চ পুলিশের কাছ থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনসহ আনুষাঙ্গিক তথ্য উপাত্তের ওপর কঠোর নজরদারি করা হচ্ছ বলে জানান ধর্ম মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, বিগত কয়েক বছর যাবত প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে লক্ষাধিক হাজি পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদিআরব যান। অন্যান্য বছর কাগজে কলমে হজের রেজিষ্ট্রেশন হতো। এ সুযোগে প্রকৃত পরিচয় গোপন করে মাহরাম হিসেবে হজ করতে গিয়ে আর ফেরত আসতেন না। শুধুমাত্র চলতি বছর ই-হজ পদ্ধতিতে রেজিষ্ট্রেশন চলছে। এ ব্যবস্থায় প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, নারীরা হজে গেলে তার অভিভাবক (মাহরাম) হিসেবে একজন করে পুরুষ যাওয়ার বিধান রয়েছে। নারী হজ যাত্রীর স্বামী, ছেলে বা অন্যান্য স্বজন যাদের সঙ্গে তার বৈবাহিক সম্পর্ক হতে পারবে না এমন পুরুষকে তিনি নিরাপত্তার জন্য সঙ্গে নিতে পারবেন। চলতি বছর অনেক আগে থেকেই ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে হজ রেজিষ্ট্রেশনসহ সার্বিক কার্যক্রম চলছে। শুধু মাহরামই নয়, পবিত্র হজ পালন যেন ক্রটিমুক্ত হয় সে ব্যাপারে ধর্ম মন্ত্রণালয় নজরদারি করছে।
আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকম / আরআর