বিদেশী বিভিন্ন কোম্পানির নকল সিগারেট তৈরি এবং নকল ব্যান্ড রোল লাগিয়ে অবৈধ বাণিজ্যের সঙ্গে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সম্পৃক্ততার সত্যতা পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)’র সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি)।
গত নভেম্বরের শেষের দিকে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমানের কাছে প্রতিবেদনটি জমা দেয়া হয়।
এর আগে গত ৮ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রথম পাতায় ‘৫ হাজার কোটি লোপাটে এক জুটি’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যাতে নকল সিগারেট তৈরি এবং নকল ব্যান্ড রোল লাগিয়ে সিগারেট বাজারজাতের সঙ্গে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেল এবং সাবেক চসিক প্যানেল মেয়রের সম্পৃক্ততার তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের কাছে জমা দেয়া ১১১ পৃষ্টার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়- নকল সিগারেট তৈরি এবং ব্যান্ডরোল তৈরির সঙ্গে জড়িত ২০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিজয় ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো এবং তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো অন্যতম বৃহৎ। এ দুই প্রতিষ্ঠান মিথ্যা ঘোষণায় কাঁচামাল আমদানি করে এবং কিশোরগঞ্জ ও চট্টগ্রামের চকোরিয়ার কারখানায় নকল সিগারেট তৈরি করে। পরে নকল সিগারেট দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয়। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটনের তামাক ব্যবসায় বিনিয়োগ রয়েছে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলের। এ ব্যবসার আয়ের একটি অংশ প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসেবে জমা দেয়া হতো। নওফেল এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান।
প্রতিবেদনের বিষয়ে এনবিআর’র সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেলের (সিআইসি)’র কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করা শর্তে তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেদন এনবিআর এ জমা দেয়া হয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপ এনবিআর’ই গ্রহণ করবে।’
জানা যায়, নকল সিগারেট তৈরি এবং নকল ‘ব্যান্ড রোল’ লাগিয়ে বিদেশী বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সিগারেট তৈরির নেতৃত্বে রয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটনের মালিকানাধীন দুই প্রতিষ্ঠান বিজয় ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো এবং তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো। এরমধ্যে বিজয় ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির ৪০ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা রয়েছে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের। বিজয় ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো এবং তারা ইন্টারন্যাশনাল টোব্যাকো প্রতিষ্ঠার পর থেকে কমপক্ষে ১০ হাজার টন সিগারেট তৈরির কাঁচামাল সংগ্রহ করেছে সিগারেটের কাঁচামাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে। যা দিয়ে ৫ কোটি সিগারেটের শলাকা তৈরি সম্ভব। এখানে সরকার ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ও অন্যান্য খাত বাবদ রাজস্ব হারিয়েছে কমপক্ষে পাঁচ হাজার কোটি টাকা।
হাআমা/